বাঙালির প্রিয় পটলের দোরমা
অনুষ্ঠান বাড়িতেও বেশ তরিবৎ করে বানানো হয় পটলের তরকারি। গরম ভাত, ডালের সঙ্গে পটলের মাখো মাখো তরকারি খেতেও লাগে বেশ ভাল। পটলের দোরমা বা পুরভরা পটল খেতে স্বাদে অতুলনীয়। গরম ভাতে এই পটল পেলে আর অন্য কোনও কিছুই লাগে না। এই পটল অবশ্য বানানো ঝক্কি বলে আজকের দিনে অনেকেই তা আর করে উঠতে চান না।
সাধারণত সি ফুড দিয়েই বানানো হত এই সব দোরমা। ইতিহাসবিদরা বলেন নবাবের জামানায় তুর্কিদের হাত ধরেই বঙ্গোপসাগরের দেশে প্রবেশ এই দোরমার। পারস্য উপসাগরে দোরমায় ব্যবহার করা হয় বাসমতি চাল। তুর্কি শব্দ দোলমাক থেকে দোরমা বা দোলমা এসেছে। যার অর্থ হল পূর্ণ করা। চিংড়ি, পোস্ত, ছানা, নারকেল , কাজু, কিশমিশ, পোস্ত এসব দিয়ে বানানো হয় পুরভরা পটল। দেখে নিন দোরমার আমিষ আর নিরামিষ রেসিপি।
বড় মাপের পটল নিয়ে খোসা ঘষে ছুলে নিন। বোঁটার অংশ সামান্য কেটে নিয়ে সামনের থেকে একদম অল্প কেটে নিন। এবার একটা চামচের পিছন দিক দিয়ে পটলের মধ্যেকার বীজ বের করে নিন। এবার ওই বীজ মিক্সিতে সামান্য জল দিয়ে একবার ঘুরিয়ে নিন। কাজু আর কিশমিশ অল্প করে কুচিয়ে নিন। এবার একবাটি ছানা নিন। কড়াইতে সরষের তেল আর গোটা জিরে দিয়ে কাঁচালঙ্কা কুচি, ১ চামচ আদাবাটা দিয়ে কষে এক বড় চামচ নারকেল কোরা দিন। এবার এর মধ্যে নুন, লঙ্কাগুঁড়ো, চিনি, খোয়া, ধনেগুঁড়ো মিশিয়ে পটলের পেস্ট দিন ওতে। ভাল করে কষে তেল ছাড়লে ছানা মিশিয়ে কাজু-কিশমিশ দিন।
চিংড়িতে নুন আর হলুদ মাখিয়ে রাখুন। একই ভাবে কড়াইতে তেলে গোটা জিরে, কাঁচা লঙ্কা, আদা কুচি আর ২ বড় চামচ নারকেল কোরা দিয়ে কষাতে থাকুন। এবার এর মধ্যে পেঁয়াজের স্লাইস, কাজু, কিশমিশ মিশিয়ে নিন। স্বাদমতো নুন, হলুদ, লঙ্কাগুঁড়ো, টমেটো বাটা মিশিয়ে চিংড়ি মিশিয়ে দিন। প্রয়োজনে সামান্য আলুসিদ্ধ মিশিয়ে নিন। পটলে সামান্য নুন মাখিয়ে ভেজে নিন। তেলের মধ্যে শুকনো লঙ্কা, এলাচ, লবঙ্গ, দারুচিনি দিয়ে নেড়ে পেঁয়াজ বাটা মিশিয়ে নিন। এবার ২ চামচ আদা-রসুন বাটা, কাঁচালঙ্কা বাটা মিশিয়ে লঙ্কা-ধনে-জিরে গুঁড়ো মেশান। স্বাদমতো নুন দিন। কাজু-চারমগজ-টকদই বাটা মিশিয়ে কষে নিন। এবার দু চামচ খোয়া ক্ষীর মেশান। প্রয়োজন মত জল দিয়ে গ্রেফি ফুটতে দিন। এবার পটলের মধ্যে পুর ভরে মুখ বন্ধ করে দিন। এবার পটল দিয়ে ৮ মিনিট ফুটতে দিলেই তৈরি দোরমা। নামানোর আগে ঘি-গরমমশলা মিশিয়ে দিন।