বরিশালের চিংড়ি পিঠে বানালে কেমন হয়
চোখ বুজলেই দেখতে পাবে, নদীমাতৃক বাংলাদেশের উপকূলের কোনও এক আঁধার করে আসা দিনের ছবি। আকাশপানে চেয়ে চেয়ে ওই দেখ এক ডুরে শাড়ি পড়া মা ব্যস্ত হাতে ছাঁকনি জাল থেকে ঝেড়ে, ছাড়িয়ে তুলছে ছোট ছোট চিংড়ি মাছ। পুকুর ধারের নারকেল আর চিংড়ি বেটে, ভাত রাঁধার পরের নিভু আগুনে, কলাপাতায় পরম যত্নে বিছিয়ে দিচ্ছে কাঁচালঙ্কার সুবাস মাখা নারকেল চিংড়ি। খানিক পরে নেয়ে এসে আবার উল্টে দেবে। আগুনের তাপে এপাশ-ওপাশ রান্না হয়ে রং ধরবে চিংড়ি বাটায়। কচি নারকেল, সামান্য পোড়া কলাপাতার গন্ধে ঘরের মানুষেরও খানিক তাড়া লাগবে ঘরে ফেরার। বালাম চালের ভাতের পাতে, কাঁচালঙ্কা ডলে, নরম চিংড়ির পিঠের এই সামান্য আয়োজন অমৃতের চেয়ে কম কিসে!
উপকরণ:
খোসা ছাড়ানো চিংড়ি মাছ বাটা – ১/২ কাপ
নারকেল কোরা – ১/২ কাপ
কাঁচা লঙ্কা -৩ টি বা স্বাদ অনুযায়ী
নুন,
হলুদ,
সর্ষে র তেল,
রসুন- ২ – ৪ কোয়া
কলাপাতা – ৬ পিস মতো কেটে নেবেন (একটু বড় পিস করবেন যেন আপনার কড়াই বা ফ্রাইং প্যান কে অনেকটা কভার করতে পারে।
পদ্ধতি:
সমান পরিমান নারকেল আর চিংড়ি বাটা কে একসাথে রসুন , কাঁচালঙ্কা দিয়ে বেটে নিন। তাতে হলুদ , নুন , অল্প তেল মিশান। বাটাটায় যেন একটু জল কম থাকে। নাহলে পিঠে শুকোতে অনেক দেরি হবে।
এবার দুটি কলা পাতার ভিতরের পিঠে তেল মাখিয়ে নিন। এবার প্যানের উপর একটি কলাপাতা রেখে তার উপর তেল মাখানো কলাপাতা টি দিন। আর তেল মাখানো কলাপাতার উপর চিংড়ি নারকেলের মিশ্রণ টি দিন। এবার অন্য একটি কলা পাতায় ভিতর পিঠে তেল মাখিয়ে একইভাবে উপর থেকে ঢেকে দিতে হবে। এবং আরেকটি পাতা দিয়ে চাপা দিতে হবে। এবার মাঝারি আঁচে রেখে ঢেকে দিন। বার বার খুলে দেখবেন না। মাঝারি আঁচে এক পিঠ প্রায় ১০ থেকে ১২ মিনিট মতো রাখতে হবে। আঁচ খুব বেশি হলে বাইরে পুড়ে যাবে ভিতরটা কাঁচা থাকবে। এক পিঠ হয়ে গেলে তুলে এনে উলটো পিঠ টা করে আবার তাওয়ার উপর বসান। এই পাশটাও হয়ে গেলে তৈরি হয়ে গেলো চিংড়ি পিঠা। হাল্কা একটু পোড়া পোড়া হবে । কারণ ওতেই চিংড়ি পিঠের ফ্লেভার আসে। এবার নামিয়ে অল্প ঠান্ডা হলে ছুড়ি দিয়ে কেটে চিংড়িপিঠে পরিবেশন করুন ভাতের সাথে ।