জগন্নাথ মন্দিরের মতো নিরামিষ ভোগের খিচুড়ি রাধবেন কেমন করে
কর্মাবাইয়ের রান্না করা খিচুড়ি খেয়ে অত্যন্ত প্রসন্ন হয়েছিলেন জগন্নাথ। সে নিয়ে অনেক গল্পই প্রচলিত। শোনা যায় তাঁর শেখানো প্রণালী মেনেই এখনও ভোগ রান্না করা হয় সেখানে।
রথযাত্রা উপলক্ষে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে বিশেষ ব্যস্ততা লক্ষ করা যায়। এখানে প্রতিষ্ঠিত জগন্নাথকে বিষ্ণুর দশম অবতার মনে করা হয়। পুরাণে জগন্নাথ ধামকে মর্ত্যের বৈকুন্ঠ অর্থাৎ স্বর্গ আখ্যা দেওয়া হয়েছে। হিন্দু ধর্মের চারটি পবিত্র ধামের মধ্যে অন্যতম। জগন্নাথের প্রধান মন্দির বক্ররেখার আকারে। এর চূড়ায় অষ্টধাতু নির্মিত বিষ্ণুর সুদর্শন চক্র রয়েছে, একে নীলচক্রও বলা হয়।
কথিত আছে, জগন্নাথের ভক্ত কর্মাবাঈ পুরীতে বসবাস করতেন এবং জগন্নাথকে নিজের পুত্র স্নেহে ভালোবাসতেন। পুত্র রূপে জগন্নাথের বালরূপের পুজো করতেন তিনি। একদিন কর্মাবাঈর মনে ইচ্ছা জাগল যে তিনি ফল ও শুকনোফলের স্থানে নিজের হাতে কিছু রেঁধে জগন্নাথকে ভোগ নিবেদন করেন। তিনি জগন্নাথকে নিজের ইচ্ছা সম্পর্কে জানান। তখন জগন্নাথ বলেন, ‘মা যা-ই বানিয়েছ, তাই খাইয়ে দাও। খুব ক্ষিদে পেয়েছে।’ কর্মাবাঈ খিচুড়ি বানিয়ে ছিলেন এবং জগন্নাথকে তা-ই খেতে দেন। জগন্নাথ খুব ভালোবেসে খিচুড়ি খেতে শুরু করেন। তখন কর্মাবাঈ জগন্নাথকে পাখা করতে শুরু করেন। গরম খিচুড়িতে জগন্নাথের মুখ না-পুড়ে যায়, সে জন্য পাখা করতে শুরু করেন তিনি।পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের ‘কর্মাবাঈয়ের খিচড়ি’-র মতো সুস্বাদু হয়, তবে মন্দ হয় না। কিন্তু তেমন ভোগ বানাবেন কী করে?
উপকরণ
মুগ ডাল: ১ কাপ
গোবিন্দভোগ চাল: ১ কাপ
জল: ৬ কাপ
ঘি: ৩ টেবিল চামচ
কাঁচকলা: ১টি
কুমড়ো: ১ কাপ
বরবটি: ১ কাপ
নারকেল কোরা: ১ কাপ
দারচিনি, লবঙ্গ এবং ছোট এলাচ: ১ টেবিল চামচ
তেজপাতা: ২টি
শুকনো লঙ্কা: ২টি
গোলমরিচ: ১ টেবিল চামচ
গোটা জিরে: ১ চা চামচ
আদা: ১ চা চামচ
কাঁচা লঙ্কা: ২-৩টি
সৈন্ধব লবণ: স্বাদ অনুযায়ী
হলুদ গুঁড়ো: আধ চা চামচ
গুড়: ১ কাপ
কাজুবাদাম: ৩ টেবিল চামচ
প্রণালী
১) প্রথমে চাল এবং ডাল ধুয়ে ভিজিয়ে রাখুন।
২) সব সব্জি ধুয়ে ডুমো করে কেটে রাখুন।
৩) এ বার কড়াইতে ঘি গরম করুন। এর মধ্যে কাজু এবং কিশমিশ ভেজে তুলে রাখুন। ওই ঘিয়ের মধ্যেই ফোড়ন হিসেবে দিয়ে দিন গোলমরিচ, শুকনো লঙ্কা, জিরে গুঁড়ো এবং গোটা গরম মশলা।
৪) এর মধ্যে ভিজিয়ে রাখা চাল এবং ডাল দিয়ে দিন।
৫) বেশ খানিক ক্ষণ নাড়াচা়ড়া করে কেটে রাখা সব্জিগুলি দিয়ে দিন।
৬) আরও একটু নাড়াচা়ড়া করে নুন, হলুদ দিয়ে দিন। এ বার পরিমাণ মতো জল দিয়ে সেদ্ধ করতে দিন।
৭) মাঝেমধ্যে নাড়াচাড়া করতে থাকুন। সব সব্জি সেদ্ধ হয়ে এলে উপর থেকে ঘি ছড়িয়ে নামিয়ে নিন।