বানিয়ে ফেলুন চট্টগ্রামের বিখ্যাত বনমোরগের ‘খুড়বো’
প্রাচীন কাল থেকে বন্দরনগরী চট্টগ্রাম পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে সুখ্যাতি অর্জন করেছে। যুগে যুগে বিভিন্ন অঞ্চলের লোকজনের আনাগোনার কারণে এখানকার জীবনধারাতেও এসেছে নানা বৈচিত্র। আর সেই প্রভাব পড়েছে চট্টগ্রামের রন্ধন শিল্পে। এই অঞ্চলের রান্নার পদ্ধতি, সাবেকি মশলার উপর বিভিন্ন অঞ্চলের সংস্কৃতির প্রভাব এখানকার রান্নায় এনে দিয়েছে এক অনন্য মাত্রা।
এটি মূলত পাহাড়ি চাকমা প্রজাতির এক অসাধারণ স্বাদের রান্না। সবচেয়ে মজার কথা হল, খুড়বো খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু হলেও এই রান্নায় এক ফোঁটাও তেল পড়ে না। মূল রান্নাটি হয় জলে। উপকরণও খুব সামান্য। সাবেকি খুড়বোতে অবশ্য প্রচুর লঙ্কা দেওয়া হয়। তবে বাড়িতে রাঁধতে গেলে নিজেদের স্বাদ অনুযায়ী ঝাল দেবেন। চাকরা জাতির লোকেরা খুড়বো রান্না করেন বনমোরগ দিয়ে। তবে আমাদের মতো সাধারণ লোকেদের পক্ষে তো আর বনমোরগ জোগার কথা সহজ কাজ নয়, তাই আমরা এই পদ রান্না করে ফেলতে পারি সাধারণ মুরগি দিয়েই।
উপকরণ
দেশি মুরগি বা বনমোরগের মাংস - ৫০০ গ্রাম
- হলুদ গুঁড়ো- ১ চামচ
- শুকনো লঙ্কা- ৩-৪টি (নিজেদের স্বাদ অনুযায়ী)
- কাশ্মীরি লঙ্কার গুঁড়ো- ২ চামচ
- রসুন- ২৫-৩০ কোয়া
- নুন- স্বাদ অনুসারে
- লেবুর রস
- ধনে পাতা কুচি (অপশনাল)
প্রণালী
একেবারে প্রথমেই মাংস খুব ভালো করে ধুয়ে নিন।পরিমাণ মতো জল উষ্ণ গরম করে তাতে নুন, হলুদ এবং কাশ্মীরি লঙ্কার গুঁড়ো দিয়ে মিশিয়ে নিন।এবার এতে দিয়ে দিন মাংসের টুকরোগুলি।অনেকে এই জলে গোটা গরম মশলা, তেজপাতা এবং আদার টুকরোও দিয়ে থাকেন। ইচ্ছে হলে আপনিও দিতে পারেন। সাবেকি রান্নায় অবশ্য এসব দেওয়া হত না।মাংস জলে সিদ্ধ করতে থাকুন। চাইলে বোনলেস মাংসও দিতে পারেন।মাংস সিদ্ধ হয়ে গেলে জল থেকে তুলে আলাদা করে নিন।জলে দেওয়া কোনও গোটা মশলা কিন্তু নেবেন না।মাংস ঠান্ডা করতে দিন।এবার শুকনো খোলায় রসুনের কোয়া এবং শুকনো লঙ্কা ভেজে নিন। রসুন ও লঙ্কা পুড়ে সুগন্ধ বের হলে সেগুলি থেঁতো করে নিন। চাইলে মিক্সিতে রাফলি বেটে নিতে পারেন। তবে মিহি করে বাটবেন না।হাড় থেকে মাংসে ছাড়িয়ে নিন। সিদ্ধ মাংসগুলি ছিঁড়ে ছিঁড়ে টুকরো করুন।এবার একটি পাত্রে হাড় বিহীন মাংসের ছেঁড়া টুকরো, লঙ্কা-রসুন বাটা এবং পাতি লেবুর রস নিয়ে এক সঙ্গে মেখে নিন।চাইলে ধনে পাতা কুচি দিয়ে দিতে পারেন।তবে ভর্তার মতো করে চটকাবেন না।গরম ভাত, রুটি এমনকি স্যান্ডুইচেও এই খুড়বো মাংস দারুণ জমে যায়। পান্তা ভাতের সঙ্গেও ঝাল ঝাল খুবড়ো খেতে দারুণ লাগে।