পাহাড় ঘেরা শ্রীনগরে মন কাড়ছে টিউলিপ গার্ডেন
রবিবার খুলে গিয়েছে টিউলিপ গার্ডেন। আর তাই মরশুমের শুরুতেই উপত্যকা জুড়ে বাঙালির দাপট, ঝোড়ো ব্যাটিং শুরু। হোটেল মালিক হিসাব দিলেন, শ্রীনগরের পর্যটনে বাঙালি একাই ৬৫ থেকে ৭০ ভাগ। বাকিদের মধ্যে গুজরাতি, মারাঠি ও দক্ষিণ ভারতীয়। বাংলার হিমগিরি বা জম্মু তাওয়াই হোক বা দিল্লি হয়ে ট্রেনে, বিমানে হোক, প্রতিদিন শ্রীনগরে পা পড়ছে চার থেকে পাঁচ হাজার বাঙালির। কলকাতা থেকে ৪০-৫০ জনের ছোট গ্রুপ হয়ে ১৮-২২ হাজারে আসছেন এঁরা। তাই শিকারা ভ্রমণে বাংলায় ডাক শুনলে অবাক হওয়ার নেই। পশমিনা বা সোয়েটারের দাম দর করার সময় ফিসফিসিয়ে বাংলায় কথা বললেও দোকানির হাতে ধরা পড়ে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা।
গুলমার্গের বরফের স্তর একটু পুরনো। কিন্তু সোনমার্গ বরফ সৌন্দর্যে অকৃত্রিম। প্রতিটি স্পটে বাঙালির প্রাধান্য। বরফকেলি। তবে শ্রীনগর একটু ঘিঞ্জি। টিউলিপ গার্ডেনের ভিড় যেন শীতের মরশুমে নিউটাউনের ইকো পার্ক। পার্কিংয়ে জায়গা খুঁজে পাওয়াই দুষ্কর। পৃথিবীতে যে এত রং, পাহাড়ের কোলে সৌন্দর্যের চাদর বিছিয়ে রাখা এশিয়ার বৃহত্তম টিউলিপ গার্ডেনে না এলে বোঝা যাবে না। কিছু ফুল এখনও ফোটেনি। বাকি ফুল যে মুঘল গার্ডেনের চশমে শাহী, শালিমার আর নিষাদ বাগে ফুটে রয়েছে। সৌন্দর্যের এই ফুলের নানা রঙের বাহার মিলিয়ে দিয়েছে দেশবিদেশের পর্যটকদের। আর এখন আতিথেয়তা দিতে ব্যস্ত কাশ্মীরের পরিবেশ আশ্চর্য রকমের শান্ত। কাশ্মীর এখন ভারতের অন্য রাজ্যের মতোই। উধমপুর থেকে অনন্ত নাগ বা বালতাল থেকে পহেলগাঁও, শান্তির নিবিড়তায় পুরোটাই অন্য কাশ্মীর। এমনিতে পর্যটকদের কেউ বিরক্ত করে না।
কিন্তু এই কাশ্মীরে বোমা-গুলি তো দূরের কথা, উঁচু স্বরে কথা বলতেও দেখা যাবে না কাউকে। যে ছেলেটা মোবাইলে পিএসএলে লাহোরের ক্রিকেট ম্যাচ দেখে, সেও আর দু’দেশের রাজনীতির খবর রাখে না। তবু হাইওয়ে জুড়ে কড়া নজর রেখে যান বিএসএফ-সিআরপিএফ জওয়ানরা। প্রতিবেশী পাঞ্জাবের কালো মেঘ শুভ্র হিমালয়ের পাশে ছায়া ফেলতে পারে। কাশ্মীর তো ঘরপোড়া গরু।