জিআই ট্যাগ পেল বঙ্গের এই তিন শাড়ি
এক সময়ে শিক্ষকরা ধুতি-শাড়ি পরে স্কুলে আসতেন। মাস্টারমশাই মানেই আমাদের চোখে একটা ছবি ছিল- সাদা খদ্দরের ধুতি-পাঞ্জাবি। আর তাই এখন বদলে গিয়েছে জিনস, টি-শার্টে। যাতায়াতের সুবিধার জন্য অনেক শিক্ষিকাই স্কুলে শাড়ি-কুর্তি পরে আসেন। তর্কের খাতিরে বলা যেতেই পারে আগের দিনে শাড়ি পরে কি মেয়েরা বাসে উঠতেন না! সেই কথাও ঠিক। তবুও দিন বদলেছে, মানুষের হাতে এখন আর অঢেল সময় নেই। আর তাই কে শাড়ি পরল কে ধুতি পরল তাই নিয়ে মাথা ঘামানোর সময়টুকুও নেই। এই জিনস-ক্রপ টপের মার্কেটেও টিকে আছে বাংলার হ্যান্ডলুম শাড়ি।
এখনকার মেয়েরা হ্যান্ডলুম শাড়ি পরতে বেশ পছন্দ করে। পুজো-পার্বণ, বিশেষ দিনে এখনও মেয়েরা শাড়ি পরেন আর তাঁদের প্রথম পছন্দ হল এই হ্যান্ডলুমের শাড়ি। হ্যান্ডলুমের শাড়ি নরম হয়, পরতে কোনও রকম ঝঞ্ঝাট থাকে না। যে ভাবে খুশি পরা হোক না কেন দেখতে লাগে দারুণ। বর্তমানে বাংলার অধিকাংশ বুটিকও কাজ করে এই শাড়ি নিয়ে।
নতুন বছরের শুরুতেই আরও একগুচ্ছ প্রাপ্তি বাংলার। বাংলার শাড়ি এবার পেল জিআই ট্যাগ। নদিয়া ও পূর্ব বর্ধমানের টাঙ্গাইল, মুর্শিদাবাদ ও বীরভূমের কড়িয়াল ও গরদকে এবার জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন বা জিআই ট্যাগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া তালিকায় রয়েছে সুন্দরবনের মধু এবং উত্তরবঙ্গের সুগন্ধি কালোনুনিয়া চালও। একসঙ্গে পাঁচ পাঁচটি জিআই ট্যাগের স্বীকৃতি পেল বাংলা।
টাঙ্গাইল শাড়ি প্রথম বোনা শুরু হয় বাংলাদেশে। সেখান থেকে উনবিংশ শতাব্দীর শেষদিকে তাঁরা পশ্চিমবঙ্গে চলে আসেন। অফ হোয়াইট, হালকা রঙের উপর বোনা হয় এই টাঙ্গাইল শাড়ি। এই শাড়ি ভীষণ নরম হয়। টাঙ্গাইল শাড়ির পাড়ও খুব আকর্ষণীয় হয়।
গরদ শাড়ি সাধারণ ভাবে লাল পাড় সাদা শাড়ি বলে পরিচিত। আর এই শাড়ি হল বাঙালিদের ঐতিহ্য। পুজো-পার্বণ এবং বিশেষ যে কোনও অনুষ্ঠানে বাঙালিরা এই লাল-সাদা শাড়ি পরেন। বর্তমানে এই লাল পাড় সাদা শাড়িতেও এসেছে অনেক বৈচিত্র্য। বীরভূমেই বোনা হয় এই গরদ শাড়ি।
আজকাল বাজারে খুবই চলছে কড়িয়াল বেনারসি। আর এই কড়িয়াল হল মুর্শিদাবাদ সিল্ক। এই শাড়ির স্টাইল হল পাটলি পল্লু। অর্থাৎ কুঁচি আর বডির নকশা আলাদা। সিল্কের কোয়ালিটি একটু মোটা হলেও এই কড়িয়াল বেনারসি দেখতে খারাপ হয় না।