ঘুরে আসুন ওড়িশার ‘সাইলেন্ট ভ্যালি’ থেকে
ওড়িশা বলতে বেশিরভাগ বাঙালির ভ্রমণের তালিকায় থাকে পুরী। হাতে বেশি সময় থাকলে পুরীর সঙ্গে কোনারক, চিল্কা হ্রদ, গোপালপুর যোগ হয়। কিন্তু এসব জায়গা ছাড়াও দারিংবাড়ি, সিমলিপাল, তপ্তপানির মতো বিভিন্ন সুন্দর জায়গা রয়েছে ওড়িশায়। এমনই একটি পর্যটন কেন্দ্র হল ফুলবনি। পূর্বঘাট পর্বতমালার কোলে অবস্থিত ছোট্ট নেচার ক্যাম্প নিয়ে গড়ে উঠেছে পর্যটন কেন্দ্রটি। অনেকেই বলেন, ‘সাইলেন্ট ভ্যালি’।
কন্ধমল জেলার আগে নাম ছিল ফুলবনি। এখনও এখানে বাস কন্ধ বা স্কন্ধ আদিবাসীদের। এই ফুলবনির মূল আকর্ষণ পাকড়াঝোড় ও পুতুদি জলপ্রপাত। পাকড়াঝোড় ফুলবনি শহর থেকে প্রায় ৩৬ কিলোমিটার দূরে গভীর জঙ্গলের মধ্যে অবস্থিত। পৌঁছাতে হবে আপনাকে প্রায় ১০০টা সিঁড়ি ভেঙে নামতে হয় নিচে। পুতুদি জলপ্রপাতও জঙ্গলের মধ্যে, ফুলবনি থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরে।
ফুলবনি শহরের আশেপাশে পাকড়াঝোড় ও পুতুদি ছাড়া সেরকম দর্শনীয় স্থান নেই। কিন্তু আপনি যদি ফুলবনি থেকে দারিংবারির দিকে রওনা দেন, দেখতে পারেন সেই ‘সাইলেন্ট ভ্যালি’। জায়গার নাম মন্দাসারু। ফুলবনি শহর থেকে ৮৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মন্দাসারু। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২,৫০০ ফুট উঁচু উপত্যকা। বিভিন্ন ধরনের ঔষধি গাছে ঘেরা গোটা জঙ্গল। রয়েছে নানা প্রজাতির পাখিও। তাদের ডাকেই ভোর হয় মন্দাসারুতে। আর শোনা যায় জলপ্রপাতের শব্দ। জঙ্গলের ঠিক কোনখান দিয়ে সে বয়ে চলেছে, তা বোঝা মুশকিল।
দারিংবারি মন্দাসারু থেকে মাত্র ৩৫ কিলোমিটার দূরে। দারিংবারি বেড়াতে গিয়ে অনেক মানুষই আসতেন এই নিস্তব্ধ উপত্যকায়। প্রতি বছর অক্টোবর থেকে মার্চ ৯০০-১০০০ মানুষ ভিড় করেন এখানে। কয়েক বছর আগে পর্যন্ত মন্দাসারুতে থাকার জায়গা ছিল না। তখন দিনের আলোতেই ঘুরে নিতে হত মন্দাসারু। তবে, এখন ওড়িশা পর্যটনের কটেজ রয়েছে মন্দাসারুতে। তাই রাত্রিযাপন কিংবা খাওয়া-দাওয়া নিয়ে আর কোনও সমস্যা নেই।ফুলবনি ও মন্দাসারুর কাছের বড় রেল স্টেশন হল বেরহামপুর। দারিংবাড়ি যেতে গেলেও আপনাকে এই স্টেশনেই নামতে হবে। এখান থেকে প্রাইভেট গাড়ি ভাড়া করে ঘুরে নিতে পারেন ওড়িশার এসব পর্যটন কেন্দ্র।