শীতের মরসুম মানে বাহারি রঙের সব্জির হাট
শীতের মরসুম মানে বাহারি রঙের সব্জির হাট। না, এমনটা নয় যে, সারা বছর বাজারে ভাল সব্জি পাওয়া যায় না। এখন তো বারো মাস সব সব্জিই পাওয়া যাচ্ছে। তবে শীতকালীন টাটকা সব্জির স্বাদই আলাদা।
সারা বছর বরফ-জমানো মটরশুঁটি দিয়ে রান্না করলেও শীতকালে টাটকা কড়াইশুঁটি দিয়ে কচুরি বানালে তার স্বাদ হয় অতুলনীয়। বিট, গাজর থেকে শুরু করে পেঁয়াজকলি, শিম, মুলো— এই মরসুমে বাজারে গেলেই থলি ভর্তি করে সব্জি আসে। বছরের আর পাঁচটা সময়ের তুলনায় এই সময়ে সব্জির দামও কম। তাই মন ভরে সব্জি খাওয়ার সেরা সময় শীতকাল।
শীতের রাতে গাজর, বিন্স, পেঁপে দিয়ে গরমাগরম স্যুপ অনেকের বাড়িতেই হয়। পাঁচফোড়ন দিয়ে পাঁচমিশেলি তরকারির স্বাদ চেখে দেখতেও মন্দ লাগে না। সরস্বতী পুজোর পরের দিন ঘটি বাড়িতে গোটা সেদ্ধ রান্নার চল রয়েছে। বিভিন্ন সব্জি গোটা রেখে অনেক ক্ষণ ধরে সেদ্ধ করে কেবল নুন ও সর্ষের তেল দিয়ে গোটা সেদ্ধর স্বাদ যে কী অপূর্ব তা বলার নয়! বাঙালরাও পিছিয়ে নেই। চৈত্র মাসের সংক্রান্তির দিনে অনেক বাঙাল বাড়িতে পাঁচন রান্না হয়। খুব বেশি মশলার আধিক্য নেই অথচ গন্ধরাজ লেবুর সঙ্গে অপূর্ব লাগে তার স্বাদ। কেবল বাঙাল-ঘটি নয়, পশ্চিমবঙ্গের এক এক জেলার তরকারির স্বাদ এক এক রকম। কিছু চেনা স্বাদ আর অনেকটা অচেনা স্বাদের ভান্ডার। ফোড়নের হেরফেরেই বদলে যায় চেনা রান্নার ছক! হোম শেফ শমিতা হালদারের সঙ্গে আড্ডার আসরে জানা গেল এমন কিছু হারিয়ে যাওয়া রান্নার কথা।
শমিতা বললেন, ‘‘আমার বড়মা নদীয়া জেলার মানুষ। শীতে একফালা জমিতে ধনেপাতা আর লাল শাক চাষ করতেন। বাজার থেকে সীম, বেগুন, মুলো, যা-ই আসুক না কেন সব তরকারিতেই ধনেপাতা দিয়ে নামানো হত! বাড়ির ধনেপাতার সুবাস বাজারের সঙ্গে মেলে না। শীতের দিনে সব্জি বাজারের কান পাতলেই শোনা যায় নানা গল্প।