আলিপুরদুয়ারের সভামঞ্চ থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ
বিধানসভা ভোটে হেরে বিজেপি গ্রামবাংলাকে তাদের প্রাপ্য থেকে ‘বঞ্চিত’ করছে— আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে এই হবে শাসক তৃণমূলের ‘রাজনৈতিক লাইন’। শনিবার উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ার থেকে তাঁর পঞ্চায়েত ভোটের প্রচার শুরু করে সেটাই বুঝিয়ে দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এপ্রিল মাসে অভিষেকের আরও চারটি সভা করার কথা। প্রত্যেকটি সভাতেই তিনি এই লাইনেই আক্রমণ আরও জোরালো করবেন বলে দলীয় সূত্রের খবর।
বস্তুত, তৃণমূল যে এই মর্মে একটি ‘ন্যারেটিভ’ তৈরি করতে চলেছে, তার ইঙ্গিত বেশ কিছু দিন ধরেই পাওয়া যাচ্ছিল। শনিবার প্রকাশ্য সভায় অভিষেকের বক্তব্যে তা এক প্রকার বৈধতা পেল।
কিছু দিন আগে রাজ্যের বকেয়ার দাবি জানাতে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহের দফতরে দেখা করতে গিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক। সঙ্গে ছিলেন দলের সাংসদেরাও। কিন্তু মন্ত্রীর দেখা পাওয়া যায়নি। দফতরের সচিব বলেছিলেন, মন্ত্রী বিহারে রয়েছেন। তিনি দিল্লিতে নেই। মন্ত্রীর সচিবকে অভিষেক বলেছিলেন, যারা দুর্নীতি করেছে, তাদের গ্রেফতার করা হোক। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হোক। দরকার হলে সিবিআইকে দিয়ে তদন্ত করানো হোক। কিন্তু গ্রামের গরিব মানুষের টাকা যেন আটকে না-রাখা হয়। সচিবের সঙ্গে অভিষেকের কথোপকথনের সেই ভিডিয়ো সর্বস্তরে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। যাতে এটা বোঝা যায় যে, ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ ভাবে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার গ্রামবাংলার মানুষকে বঞ্চিত করছে। সেই কথোপকথনের সময়েই কেন্দ্রকে চ্যালেঞ্জের সুরে ১৫ দিন সময় দিয়েছিলেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক। বলেছিলেন, ‘অন্য পথ’ অবলম্বন করবেন।
গ্রামীণ অর্থনীতি, প্রান্তিক মানুষদের রুজিরোজগার অনেকাংশেই নির্ভর করে ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনা, গ্রামীণ সড়ক যোজনা ইত্যাদি প্রকল্পের উপর। ১০০ দিনের কাজের মতো কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্রীয় সরকার। তাদের বক্তব্য, রাজ্য সরকার ওই খাতে অর্থব্যয়ের কোনও স্পষ্ট হিসেব দেয়নি। সে কারণেই ওই অর্থ আটকে রাখা হয়েছে। একই বক্তব্য রাজ্য বিজেপিরও। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও সেই মর্মে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে চিঠি লিখেছেন। যে চিঠিকে ‘হাতিয়ার’ করেছেন অভিষেক। বলেছেন, ‘‘এমন বিরোধী দলনেতা দেখেছেন, যিনি কেন্দ্রকে চিঠি লিখে বলছেন যে, বাংলার মানুষের অধিকারের টাকা বন্ধ করে দিন!’’