ওটি-র পর বাড়িতে ফিরে গেলেন মমতা
চিকিৎসকদের কথা না শুনেই বাড়ি ফিরে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু হাসপাতালে না থাকলেও তাঁকে কড়া নিয়মকানুন মেনে চলতে হবে। চিকিৎসকেরা জানিয়ে দিয়েছেন, মমতার পায়ের লিগামেন্ট অর্থাৎ পেশিতন্তুর আঘাত সারাতে অস্ত্রোপচার (সার্জিকাল প্রসিডিওর) করতে হয়েছে। তাই আপাতত হাঁটাচলার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ মেনে চলতে হবে তাঁকে। পাশাপাশি, বিশ্রামেও থাকতে হবে। কতটা বিশ্রাম, তা স্পষ্ট করেননি চিকিৎসকেরা। কত দিনের বিশ্রাম তা-ও জানাতে চাননি। এক চিকিৎসককে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘এ ভাবে আগে থেকে বলা যায় না কি কত দিনের বিশ্রাম প্রয়োজন!’’ কিন্তু এই অনিশ্চয়তার জন্য আরও একটি বিষয় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তা হল, রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট চলাকালীন মমতার উপস্থিতি, রাজ্যের শাসকদলের সর্বময় নেত্রীর ‘সহজলভ্যতা’।
শনিবার পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে পায়ের অস্ত্রোপচারের জন্য বৃহস্পতিবার এসএসকেএম হাসপাতালে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। দুপুরে হেঁটেই ঢোকেন হাসপাতালে। যদিও সামান্য খুঁড়িয়ে হাঁটছিলেন তিনি। কিন্তু সন্ধ্যায় যখন হাসপাতাল থেকে মমতা বেরোন, তখন তিনি হুইলচেয়ারে। উডবার্ন ব্লকের সামনেই দাঁড়িয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ি। হুইলচেয়ার ছেড়ে সেই গাড়িতে উঠতে কিছুটা অসুবিধাতেই পড়তে দেখা যায় মমতাকে। ব্যান্ডেজ বাঁধা পা সম্ভবত প্লাস্টারেই মোড়া ছিল। সেই পা নিয়ে তিনি হুইলচেয়ার থেকে উঠে দাঁড়ালেও গাড়ির পা-দানিতে পা রাখতে পারছিলেন না। অভিষেক বন্দোপাধ্যায়কে দেখা যায় এগিয়ে এসে হাত ধরে সাহায্য করতে।
তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গে দেখা করতে সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ হাসপাতালে এসেছিলেন অভিষেক। তার আগে কলকাতা প্রেস ক্লাবে ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন তিনি। পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে তৃণমূলের তরফে সেখানে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি।
সন্ধে ৭টা নাগাদ হাসপাতাল থেকে বেরোন চিকিৎসকেরা। মুখ্যমন্ত্রীর পায়ের আঘাত এবং অস্ত্রোপচার সংক্রান্ত তথ্য দিয়ে তাঁরা জানান, মুখ্যমন্ত্রীর পায়ের পেশিতে আঘাতের চিকিৎসার জন্য একটি সার্জিকাল প্রসিডিওর করা হয়েছে। সেই অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে। বৃহস্পতিবার তাঁকে হাসপাতালেই থেকে বিশ্রাম নিতে বলা হয়েছিল। যাতে চিকিৎসকেরা মুখ্যমন্ত্রীকে পর্যবেক্ষণে রাখতে পারেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানান, তিনি বাড়ি ফিরতে চান। তাঁর ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিয়েই মুখ্যমন্ত্রীকে ছুটি দেওয়া হয়েছে।