সকাল থেকেই পথ অবরোধ, ব্যাহত ট্রেন চলাচল
দীর্ঘদিন ধরেই একাধিক দাবি সরকারকে জানিয়ে আসছিলেন কুড়মি সম্প্রদায় কিন্তু অভিযোগ, সেই দাবিতে কর্ণপাত করেনি সরকার। সেই কারণেই ফের আন্দোলনে কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষেরা। ১ এপ্রিল থেকে জঙ্গলমহলে শুরু হয়েছে ‘ঘাঘর ঘেরা’ নামের অবরোধ কর্মসূচি। ডাক দেওয়া হয়েছে রেল অবরোধেরও। সেই ঘোষণা মতোই বুধবার ভোর থেকে পুরুলিয়ার কুস্তাউরে রেল ও ৫ নং রাজ্য সড়ক অবরোধ করলেন আদিবাসী কুড়মি সমাজ। অবিলম্বে কুড়মিদের এসটি তালিকাভুক্ত করার দাবিতে অনির্দিষ্ট কালের জন্য এই অবরোধ শুরু করেছেন তাঁরা।
কুড়মিদের দাবি, রাজ্য সরকারকে কুড়মিরা তফসিলি উপজাতি এই কথা জানিয়ে সিআরআই-এর সংশোধিত রিপোর্ট পাঠাতে হবে। এ দিন সকাল থেকেই চলছে অবরোধ। যার জেরে ব্যাহত হয়েছে রাজ্য সড়কের যান চলাচল। রেলের তরফ থেকে আগেই দক্ষিণ পূর্ব রেলের পুরুলিয়া আদ্রা শাখায় যাবতীয় ট্রেন বাতিল করার কথা ঘোষণা করা হয়। বহু ট্রেনের পথও ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই অবরোধের ফলে সাধারণ মানুষের চরম হয়রানি হতে চলেছে তাতে সন্দেহ নেই।
আদিবাসী কুড়মি সমাজের জেলা সম্পাদক সাধন মাহাতো বলেন, “আজকে পথ ও ট্রেন অবরোধ শুরু করলাম। রাজ্য সরকার সিআরআই রিপোর্ট পাঠানোর নামে আমাদের সঙ্গে ভেলকিবাজি করছে। এই ছলনার বিরুদ্ধে আমরা পথে নেমেছি আজ। এর আগেও পথে নেমেছিলাম আমরা। আমরা চাই আমাদের কুড়মি জাতিকে এসটি তালিকার অন্তর্ভূক্ত করতে হবে। কুড়মালি ভাষাকে অষ্টম তফশিলি ভাষার অন্তর্ভূক্ত করতে হবে। সারনা ধর্ম চালু করতে হবে ।
শুধু পশ্চিম মেদিনীপুরের খেমাশুলি নয়, এ দিন সকাল থেকে পুরুলিয়া জেলাতেও একই দাবিতে রেল অবরোধ শুরু হয়েছে৷ পুরুলিয়ার কুস্তাউর স্টেশন রেল লাইন অবরূদ্ধ করে রেখেছেন আন্দোলনকারীরা৷ অবরোধের জেরে পুরুলিয়া-হাওড়া-পুরুলিয়া এক্সপ্রেস পুরুলিয়ার বদলে আদ্রা থেকে ছেড়ে হাওড়ার উদ্দেশে রওনা দেয়। পুরুলিয়া এক্সপ্রেস ছাড়াও বেশ কিছু ট্রেনের যাত্রাপথ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। ট্রেন চলাচলে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে বাঁকুড়া জেলাতেও৷ দুরপাল্লার একাধিক ট্রেনের যাত্রাপথ বদল করে গোমো দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এর জেরে সকাল থেকেই বাঁকুড়া স্টেশনে শুরু হয়েছে যাত্রী দুর্ভোগ। একাধিক ট্রেন বাতিলের ফলে অনেক যাত্রীই স্টেশনে এসেও ট্রেন না পেয়ে বাড়ি ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। দিনভর এই দুর্ভোগ চলার আশঙ্কা রয়েছে৷ আন্দোলনকারীদের হুঁশিয়ারি, দাবি পূরণ না হলে আন্দোলনের মাত্রা আরও বাড়বে৷ ফলে প্রবল গরমের মধ্যে যাত্রী ভোগান্তিও চরম সীমায় পৌঁছবে৷ প্রসঙ্গত, গত সেপ্টেম্বর মাসেও আদিবাসী সমাজের রেল সড়ক অবরোধের ফলে চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছিলেন সাধারণ মানুষ৷