এককালের গণ আন্দোলনের সঙ্গী শুভেন্দু অধিকারী এখন তাঁর প্রতিপক্ষ । সংগৃহীত ছবি
পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে খেজুরিতে গিয়ে বামফ্রন্ট এবং বিজেপিকে বিঁধলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিপিএম আমলে নন্দীগ্রামে ঢোকা যেত না বলে কড়া ভাষায় দাবি করলেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। একইসঙ্গে আজ, সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাম না করে আক্রমণ করেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকেও। সরকারি মঞ্চ থেকে এদিন জেলার দু’লাখেরও বেশি মানুষকে পরিষেবা প্রদান করা হয়েছে। সেখান থেকেই স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে বিজেপি ও সিপিএমকে নিশানা করেন মুখ্যমন্ত্রী ।
খেজুরির সঙ্গে তাঁর পুরনো সম্পর্কের কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন মমতা। স্মৃতি হাতড়ে মমতা বলেছেন, ‘‘আমার এখন বলতে লজ্জা লাগে। যখন নন্দীগ্রামে সূর্যোদয় হয়েছিল, সূর্যোদয়ের নামে কাউকে ঘর থেকে বার হতে দেওয়া হয়নি ১০ দিন। ১৪ মার্চ যখন গুলিতে মারা গিয়েছিল, খেজুরি দিয়ে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হত না। যারা বড় বড় কথা বলে, সেই সময় সেই গদ্দারেরা মাঠে ছিল না। বাড়িতে বসেছিল। লুকিয়েছিল। আমি সে দিন আপনাদের জন্য ২৬ দিন অনশন করছিলাম। ১৪ মার্চের পর আমি ছুটে এসেছিলাম।’’ মমতা সাধারণত শুভেন্দুর নাম নেন না। তিনি বিরোধী দলনেতাকে সাধারণত ‘গদ্দার’ বলেই সম্বোধন করে থাকেন। অতএব খেজুরির বক্তব্যে মমতা যে ‘গদ্দার’ বলতে শুভেন্দুকেই বুঝিয়েছেন, তা সহজেই অনুমেয়।
বিধানসভার বিরোধী দলনেতা তথা নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দুর জেলা পূর্ব মেদিনীপুরে চার দিনের জেলা সফরে সোমবার গিয়ে পৌঁছেছেন মমতা। নন্দীগ্রামের পাশে খেজুরিতে তাঁর প্রশাসনিক সভার মঞ্চ থেকে মমতা বললেন, ‘‘নন্দীগ্রামে যখন সূর্যোদয় হয়েছিল, তখন গদ্দাররা মাঠে ছিল না। আমি প্রথম ছুটে এসেছিলাম! যারা আমাদের থেকে সব নিয়ে এখন বড় বড় কথা বলছে, তাদের উদ্দেশে একটাই কথা বলব। ঈশ্বর-আল্লা তেরো নাম, সব কো সুমতি দে ভগবান।’’
সোমবার পূর্ব মেদিনীপুরে মমতার সভার আগে রবিবার শুভেন্দু রাস্তা নিয়ে কটাক্ষ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রীকে। বলেছিলেন, ‘‘ওঁকে গ্রামের রাস্তাগুলো দেখিয়ে নিয়ে আসবেন।’’ খেজুরির সভা থেকে রাস্তা নিয়েও বলেছেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘আমি রাস্তা করছি আর ওরা ভাঙছে। বিজেপির কাছ থেকে টাকা নিয়ে রাস্তা ভাঙছে। কী করব? ১২ হাজার কিলোমিটার রাস্তা করার পরিকল্পনা করেছি। সেটা পুরোটাই রাজ্যের টাকায় হচ্ছে। কেন্দ্র একটা টাকাও দেয়নি। এ সব নিয়ে আপনাদের ভুল বোঝানো হচ্ছে।’’