মানুষের হাতেই করমণ্ডল বিপর্যয়
রবিবার সকালে ওড়িশার বাহানগা বাজারের দুর্ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে সরকারি সংবাদমাধ্যম দূরদর্শনকে সাক্ষাৎকার দেন রেলমন্ত্রী। সেখানে তিনি বলেন, “রেলের নিরাপত্তা সংক্রান্ত কমিশনার(সিআরএস) গতকাল দুর্ঘটনাস্থলে ছিলেন... সিআরএস সবার সঙ্গে কথা বলেছেন, এবং দ্রুত তদন্ত এগিয়েছেন। দুর্ঘটনার মূল কারণ চিহ্নিত করা গিয়েছে।’’ এর পরই তাঁর মন্তব্য, ‘‘এই কাজ যাঁরা ঘটিয়েছেন তাঁদেরও চিহ্নিত করে ফেলা হয়েছে। সিআরএস তদন্ত রিপোর্ট, এই দুর্ঘটনার কারণ খুব শীঘ্রই জানা যাবে।’’
তা হলে কি চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হওয়ার নেপথ্যে যান্ত্রিক ত্রুটির সম্ভাবনা উড়িয়েই দিলেন রেলমন্ত্রী? এই প্রশ্নের উত্তরে অবশ্য অশ্বিনী বলেন, “এখনই এ নিয়ে মন্তব্য করা ঠিক হবে না।” তদন্ত-রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেছেন তিনি।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ ‘আপ মেন লাইন’ দিয়ে যাওয়ার কথা ছিল করমণ্ডল এক্সপ্রেসের। প্রায় একই সময়ে ‘ডাউন মেন লাইন’ দিয়ে ফেরার কথা ছিল বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসের। রেলের একটি সূত্রের দাবি, ওই দু’টি ট্রেনের কোনওটিরই দুর্ঘটনাস্থল বাহানগা বাজার স্টেশনে দাঁড়ানোর কথা নয়। তাই ‘থ্রু’ চলে যাওয়ার জন্য দু’টি ট্রেনেরই সিগন্যাল দিয়েছিলেন স্টেশনের সহকারী স্টেশনমাস্টার। তার আগেই তিনি প্যানেল থেকে সিগন্যাল দিয়ে দু’টি মালগাড়িকে ‘ডাউন’ ও ‘আপ’ লুপলাইনে দাঁড় করিয়েছিলেন। সঠিক সময়ে করমণ্ডল এক্সপ্রেস ও বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস বাহানগা বাজার স্টেশনের কাছাকাছি আসে। সিগন্যাল সবুজ দেখে দু’টি ট্রেনই নির্দিষ্ট পথে এগিয়ে যায়। রেলের ওই সূত্রের দাবি, এর পরেই আপ মেন লাইনের ‘১৭এ পয়েন্ট’ থেকে লুপ আপ লাইনে ঢুকে পড়ে করমণ্ডল। তার পর সেটি সজোরে ধাক্কা মারে ওই লুপ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মালগাড়ির পিছনে। বেলাইন হওয়া করমণ্ডলের অন্তত ১৭টি বগি ছিটকে পড়ে এ দিক-ও দিক। তার ইঞ্জিন উঠে যায় মালগাড়ির ওয়াগনের উপরে। রেল জানিয়েছে, ঠিক তখনই ডাউন মেন লাইনে ঢুকে পড়েছিল বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। বেলাইন হওয়া করমণ্ডলের কয়েকটি কামরা সেই লাইনের উপর গিয়ে পড়ে। তার জেরে বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসের দু’টি কামরা বেলাইন হয়ে যায়।