চোখ কাড়লেও লক্ষ্য কাড়তে পারেনি
সাল ২০১১। ২৮ মার্চ। হোলিতে পাড়ার রাস্তায় খেলছিল বছর তিনেকের কন্যা। তিন যুবক এসে তাকে লক্ষ্য করে অ্যাসিড ছুড়ে মারে। ঝলসে গিয়েছিল ছোট্ট মুখটি। চোখে নেমে এসেছিল আঁধার। তার পরের ছ’টি বছরের কথা স্মরণ করেই শিউরে উঠেছিলেন পবন এবং তাঁর স্ত্রী। দেশের এমন কোনও হাসপাতাল নেই যে তাঁরা ছুটে বেড়াননি! এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত ছুটে বেড়িয়েছেন শুধুমাত্র কন্যার দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে আনার জন্য। আজ সেই কন্যাই সিবিএসই দশম পরীক্ষায় ৯৫.২০ শতাংশ পেয়ে স্কুলের মধ্যে প্রথম হয়েছে।
কাফি। হ্যাঁ, জন্মানোর পর পরিবারের সদস্যরা এই কন্যার নাম রেখেছিল কাফি। কেন? কারণ, এই একটি মাত্র সন্তানই যথেষ্ট। আর সন্তান নয়। এক সন্তানই তাঁদের পরিবারকে সম্পূর্ণ করেছে। তাই জন্মানোর পরই সেই অর্থ বোঝাতে কন্যার নাম দেওয়া হয়েছিল কাফি। এই কন্যার প্রথম বাসস্থান ছিল হরিয়ানার হিসার। বাবা পবনের ছোট একটি দোকান ছিল। তা দিয়ে কোনও রকমে সংসারও চলে যাচ্ছিল। শৈশব থেকেই কাফিও খুব মিশুকে। তার বয়স যখন তিন, কাফির জীবনে নেমে এল এক দুর্বিষহ দিন। তার উপর অ্যাসিড হামলা হল। দু’বছর পর হামলকারীরা ছাড়াও পেয়ে গিয়েছিল।
এক সংবাদমাধ্যমকে সেই কন্যা বলেন, “জীবনে এমন একটা সময় এসেছিল যখন মনে হয়েছিল আমার সব কিছু শেষ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু আমার বাবা-মা আশা হারাননি। যাঁরা আমার এই অবস্থা করেছে, যাঁরা আমার দৃষ্টিশক্তি কেড়ে নিয়েছে, আমার জীবনে অন্ধকার নামিয়ে এনেছে, আজ তাঁদের মুখের উপর জবাব দিতে পেরেছি। তাদের এই বার্তাই দিতে চাই, চোখ কেড়ে নিতে পারো তোমরা, কিন্তু আমার লক্ষ্যকে ছিনিয়ে নিতে পারোনি।