শুধু নম্বর বাড়ানো নয়, নম্বর কমানোর কাজও করতেন নীলাদ্রি
নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত নীলাদ্রি দাসের নামে ২টি কোম্পানির হদিশ মিলেছে। একটি রিয়েল এস্টেট, অপরটি তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি। দুটি সংস্থারই ঠিকানা পূর্ব দিল্লি । সিবিআই সূত্রে খবর, একটি কোম্পানির নাম এনডি বিল্ডকন প্রাইভেট লিমিটেড। যা তৈরি করা হয়েছিল ২০২১ সালে। এর আগে ২০১৫-য় এনডি ইনফো সিস্টেম প্রাইভেট লিমিটেড নামে আরেকটি সংস্থা খোলা হয়।
বছর খানেক আগেই নীলাদ্রির আরও একটি সংস্থা 'এনডি ইনফোসিস্টেম্স প্রাইভেট লিমিটেড' টেন্ডারে অংশ নিয়ে পিএসসি-র নিয়োগ পরীক্ষার ওএমআর-এর মূল্যায়ন ও পরীক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন কাজের দায়িত্ব পায়। সেই সূত্রে তিনি পিএসসি-র কর্তাদের একাংশের সঙ্গে বৈঠকও করতেন বলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের দাবি। এমনকী, অভিযোগ উঠেছে যে, তথ্যপ্রযুক্তি পরিষেবা প্রদানের জন্য সংস্থা বাছাইয়ের অন্যতম শর্ত হিসেবে নীলাদ্রি যে শংসাপত্র পিএসসি-র টেন্ডারে জমা দিয়েছিলেন, তা ছিল ভুয়ো!
সূত্রের খবর, এসএসসি-র কেলেঙ্কারিতে নীলাদ্রির নাম উঠে আসার পর পরীক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন কাজকর্ম স্থগিত রাখতে কার্যত বাধ্য হয়েছে পিএসসি। আগে থেকেই নীলাদ্রির সংস্থার কাজের গুণগত মান নিয়ে কমিশনের অন্দরে নানা প্রশ্ন উঠেছিল। ওএমআরের মূল্যায়নে ওই সংস্থার কাছ থেকে যথাযথ পরিষেবা মিলছিল না বলে কমিশন সূত্রেই জানা গিয়েছে।
রাজ্য পাবলিক সার্ভিস কমিশনের ওয়েবসাইট রক্ষণাবেক্ষণেরও দায়িত্বে ছিল নীলাদ্রির সংস্থা। কমিশনের এক আধিকারিক জানান, এক বছর আগে নীলাদ্রির সংস্থা সরকারি ভাবে দায়িত্ব পায়। পুরোনো সংস্থাটির কাছ থেকে নীলাদ্রি কাজ বুঝে নেওয়ার ঠিক পরেই 'ক্লার্কশিপ' পরীক্ষার টাইপ টেস্টের কাজ করে তাঁর সংস্থা। সেই সময়ে কমিশনের একাধিক কর্তার সঙ্গে তাঁর বৈঠকও হয়। এবং সেই ইস্তকই পিএসসি অফিসের অন্দরে তাঁর গতিবিধি অনেকটাই অবাধ হয়ে হয়ে পড়ে বলে জানা যাচ্ছে।
এই ব্যাপারে পিএসসি দুর্নীতিমুক্ত মঞ্চের মুখপাত্র ইন্দ্রজিৎ ঘোষ বলেন, 'পিএসসি-র বিভিন্ন পরীক্ষার ফল সময় মতো প্রকাশ না-করায় চাকরিপ্রার্থীরা জেরবার হয়ে যাচ্ছেন। এখন আরও দেখার যে, নীলাদ্রির সংস্থার হাতযশে যে সব পরীক্ষার ফল প্রকাশ থমকে রয়েছে, সেগুলিতে কোনও কেলেঙ্কারি হয়েছে কি না।' এই ব্যাপারে পিএসসি-র চেয়ারপার্সন পিয়ালী সেনগুপ্তকে ফোনে ও এসএমএসে যোগাযোগ করেও কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।