টর্চের আলোয় অপারেশন সফল করলেন ছয় চিকিৎসক ! সংগৃহীত ছবি
অন্ধকার ওটি-র মধ্যেই একটি ইউরোলজির অস্ত্রোপচার মোবাইলের টর্চ জ্বালিয়ে চালিয়ে যান চিকিৎসকরা। পরে মেডিক্যালের অধ্যক্ষ ইন্দ্রনীল বিশ্বাস জানান, ১০ মিনিটের মতো সময় বিদ্যুৎ ছিল না। কিন্তু চিকিৎসকরা থেমে থাকেননি। অপারেশন সফল হয়েছে ছবি দাস নামে লিলুয়ার বছর ছেচল্লিশের ওই কিডনি রোগীর।
দুপুর তখন পৌনে তিনটে। এসএসবি’র দোতলার সার্ভার রুমে আগুন লাগে। তিনতলার পিজিটিরাই প্রথমে তা টের পান। পোড়া গন্ধ পান পিজিটিরা। সেই কারণ খুঁজতে গিয়ে সার্ভার রুমে আগুন লাগার বিষয়টি নজরে আসে তাঁদের। আগুন যাতে ছড়িয়ে না পড়ে সে জন্য তিনটে নাগাদ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। সেই সময় অস্ত্রোপচার চলছিল বছর ছেচল্লিশের ছায়া ঘোষের। ৬-৭ সেন্টিমিটারের টিউমার মহিলার কিডনির ডানদিক থেকে বার করছিলেন ইউরোলজির চিকিৎসকরা। আচমকা বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় বিপদে পড়ে যান ডাক্তাররা।
এ দিকে, ওই অবস্থায় অপারেশন বন্ধ রাখা সম্ভব ছিল না। পেট কাটা হয়ে গিয়েছে। টিউমারের অবস্থান এমন ভাবে ছিল যে প্রচুর রক্তক্ষরণের সম্ভাবনা ছিল। এই পরিস্থিতিতে চারটি মোবাইলের আলো জ্বেলে টিউমার বার করানোর সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা।
অপারেশন থিয়েটারের ভিতরে অস্ত্রোপচার চলছিল হাওড়ার লিলুয়ার বাসিন্দা, বছর ৪৮-এর ছবি দাসের। টিউমার হওয়ায় একটি কিডনি বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। ইউরোলজি বিভাগের প্রধান সুনির্মল চৌধুরীর নেতৃত্বে দেড় ঘণ্টার জটিল এই অস্ত্রোপচারের দায়িত্বে ছিল ৬ চিকিৎসকের টিম! কিন্তু অগ্নিকাণ্ডের জেরে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেওয়ায়, নিভে যায় ওটির আলো।বন্ধ হয়ে যায় বৈদ্যুতিন সরঞ্জামও। সেই অবস্থায় নিজেদের মোবাইলের টর্চ জ্বালিয়ে অস্ত্রোপচার চালিয়ে যান চিকিৎসকরা। প্রায় ৪০ মিনিট ধরে এভাবেই চলে গোটা প্রক্রিয়া।
চিকিৎসক সুনির্মল চৌধুরী জানালেন, কঠিন ওই পরিস্থিতিতে তাঁরা কীভাবে শিরা-ধমনী সুতো দিয়ে বাঁধেন। কীভাবে বন্ধ করলেন রক্ত। ভয়ঙ্কর ঝুঁকি নিয়ে শেষ হয় অপারেশন।