শেখ সুফিয়ানকে বিশাল এক ঋণ এর হিসাব দেখালো ব্যাঙ্ক। সংগৃহীত ছবি
তৃণমূলের নেতা মন্ত্রী থেকে সিবিআই কারোর বাড়িই বাদ যাচ্ছে না সিবিআই তলবে । এমনকি শুধুই তলব নয়, তলব করলেই মিলছে বিপুল সম্পত্তির সংভার । প্রতিদিন নিত্য নতুন নাম জড়াচ্ছে দুর্নীতির তালিকায় । ঠিক তেমনই তৃণণূলের নন্দীগ্রামের নেতা এবং পূর্ব মেদনীপুর জেলা পরিষদের সহ সভাপতি শেখ সুফিয়ানকে বিশাল এক ঋণ এর হিসাব দেখালো ব্যাঙ্ক । জানা যায় ব্যাঙ্ক থেকে নেওয়া ঋণের টাকা ফেরত না দেওয়াই এমন নোটিশ জারি করা হয়েছে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের তরফে ।
সূত্রের খবর,কন্টাই কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের নন্দীগ্রাম ব্রাঞ্চ থেকে বাড়ি করার জন্যে ঋণ নিয়েছিলেন এই তৃণমূল নেতা। গত ২০১৪ সালে জাহাজের আদলে তৈরি বাড়ির জন্য ২৫ লক্ষ টাকা ঋণ নেন তিনি। ব্যাঙ্ক সূত্রে খবর, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাস অবধি কিস্তির টাকা দিয়েছেন। তারপর গত এক বছরের বেশি সময় ধরে সেই টাকা জমা করেননি বলে ব্যাঙ্কের দাবি।
তবে শুধু বাড়ি নয়,ট্রলার কিনতেও কন্টাই কো অপারেটিভ ব্যাঙ্কের নন্দীগ্রাম শাখা থেকে গত ২০২০ সালের মার্চ মাসে ঋণ নিয়েছিলেন নন্দীগ্রামের এই তৃণমূল নেতা। তবে ব্যাঙ্কের অভিযোগ, ঋণ নেওয়ার তিন বছর কেটে গেলেও কিস্তির একটাও টাকা ব্যাঙ্কে জমা দেয়নি সুফিয়ান। জানা গিয়েছে, কয়েকবার আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেছিলেন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কোনও আলোচনা ফলপ্রসু না হওয়ায় শেখ সুফিয়ান এবং তাঁর ঋণের গ্যারেন্টারদের শেষমেশ নোটিস পাঠায় কন্টাই কো অপারেটিভ ব্যাঙ্ক
ব্যাঙ্ক সূত্রে খবর, লোন বাকি রয়েছে ৪৯ লক্ষ টাকা। ২০১৪ সালে জাহাজ বাড়ি তৈরির জন্য ২৫ লক্ষ টাকা লোন নিয়েছিলেন। ২০২০ সালে একটি ট্রলার কেনার জন্য ২৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা লোন নিয়েছিল। জাহাজবাড়ির এখনও প্রায় সাত লক্ষ টাকার কাছাকাছি লোন বাকি রয়েছে। এবং ট্রলারের কোনও লোনই এখন পর্যন্ত শোধ হয়নি বলে অভিযোগ করছে ব্যাঙ্ক।
এই বিষয় ব্যাঙ্কের সেক্রেটারি অ্যাপোল আলি বলেন, “ওনার দু’টি লোন রয়েছে। একটি হাউসবিল্ডিং লোন আর একটা ব্যবসার লোন। দু’টি লোনের কিস্তি সময়মতো জমা না পড়ায় রিকভারি সেকশানে ওনার ফাইল পাঠানো হয়েছে। তবে এখনি নিলাম নোটিশ পাঠানোর কথা নয়। প্রথমে ডিফল্ট নোটিশ পাঠান হবে। এররপর লোন পরিশোধ না করলে চূড়ান্ত নোটিশ অর্থাৎ নিলাম নোটিশ পাঠান হবে।”
যদিও, গোটা বিষয়টিকে চক্রান্ত বলেই মনে করছেন তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ান। তিনি বলেন, “আমি লোন নিয়েছি। পরিশোধ করছি। কিছু টাকা পরিশোধে বাকি আছে। টাকা শোধ করে দেব। এই নিয়ে খবর করার কী আছে। আমি বাড়ি করার জন্য ও ট্রলার কেনার জন্য টাকা নিয়েছি। শোধ করে এসেছি আর কিছু টা বাকি রয়েছে। এখনও এক বছর সময় আছে। এটা নিয়ে এত হৈ চৈ কিসের। আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্যই এই সব রাজনৈতিক চক্রান্ত করা হচ্ছে।”বিজেপি নেতা প্রলয় পাল কটাক্ষ সুরে বলেন, “১০০দিনের কাজ,আবাস যোজনার বাড়ি সহ একাধিক চুরির থেকে বাঁচাতে এই লোন দেখান হয়েছে। শুধুই আইওয়াশ মাত্র সমগ্র ঘটনা। মানুষ বুঝবে যে হিরু ডাকাতের বংশধর সুফিয়ান লোন করে বাড়ি করেছে।”
এই প্রসঙ্গে সুফিয়ান বারংবার একটা কথায় বলে যে , যে তার হাতে এখনও প্রায় এক বছর সময় রয়েছে আর ইতিমধ্যেই সে অনেকটা টাকা জমাও করে দিয়েছে য়ে টুকু বাকি রয়েছে তা এক বছরের মধ্যেই তিনি শধ করে দেবেন । তিনি জানান, এই ধরনের ভুলভাল অভিযোগ তুলে তাকে নীচু করে দেখানোর চেষ্টা করছে অন্য দলের নেতারা ।