কুয়াশা চলবে আরও দিন দশেক
গাড়ির সামনে খুব বেশি হলে এক হাত দূর পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে। আশপাশে সবই আবছায়া। কখনও কখনও সেটুকুও দেখা যাচ্ছে না। সামনে কোনও গাড়ি চললে সেটির আলোই তখন এগোতে ভরসা।
গত পাঁচ দিনে লালবাজারের কর্তাদের এই চিন্তা আরও বেড়েছে ভোরের শহরে দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান দেখে। সূত্রের খবর, গত পাঁচ দিনে শহরে ভোরের দিকে এমন ৪২টি পথ দুর্ঘটনার খবর পুলিশের খাতায় নথিভুক্ত হয়েছে। প্রতিটি ঘটনাই কুয়াশার জেরে ঘটেছে বলে মনে করা হচ্ছে। এর মধ্যে ১৮টি ঘটনায় মোটরবাইক সওয়ারিরা আহত হয়েছেন। কিছু ক্ষেত্রে ঘন কুয়াশার জেরে চালকেরা দেখতেই পাননি, সামনে কে রয়েছেন! পুলিশের গার্ডরেলে সরাসরি ধাক্কা মারার ঘটনাও ঘটেছে। চিন্তা বেড়েছে রাতের পরিস্থিতি নিয়েও। রাস্তাঘাটে ঘন কুয়াশার চাদর ঘিরে ধরছে রাতের দিকেও। পুলিশ সূত্রের খবর, গত রবিবার রাতে গান্ধী মূর্তির সামনে মোটরবাইক দুর্ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে কুয়াশার বিষয়টিই উঠে এসেছে। একই ভাবে গত শুক্রবার বাসন্তী হাইওয়েতে এক পথচারীকে ধাক্কা মারে একটি মোটরবাইক।
আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, এখনই এই পরিস্থিতি বদলানোর সম্ভাবনা নেই। কুয়াশা চলবে আরও দিন দশেক। আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, বাতাসে ভেসে থাকা জলীয় বাষ্পের সূক্ষ্ম কণাগুলি রাতে ঠান্ডা হয়ে আসা মাটির কাছাকাছি এসে ঘনীভূত হয়ে ভূপৃষ্ঠের কাছে ভেসে বেড়ায়। সেটাই কুয়াশা। ভোরের দিকে যা আরও বাড়ে। পরিবেশ বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, কুয়াশা ঘন হওয়ার কতগুলি কারণ আছে। তাঁদের মতে, কোনও কারণে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেড়ে গেলে, জলীয় বাষ্পের সঙ্গে ধূলিকণা মিশলে, ধোঁয়া মিশলে বা বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রার তারতম্য ঘটলে কুয়াশা ঘন হয়। গাড়ি বা বাইকচালকদের ক্ষেত্রে দৃশ্যমানতার সমস্যা তো হয়ই, কুয়াশার সঙ্গে ধোঁয়া মিশে যে ঘন ধোঁয়াশা তৈরি হয়, তা স্বাস্থ্যের পক্ষেও ক্ষতিকারক।