কড়া ডোজের অ্যান্টিবায়োটিক শনিবারই বন্ধ করা হয়েছে
স্যালাইনের মাধ্যমে কড়া ডোজের অ্যান্টিবায়োটিক শনিবারই বন্ধ করা হয়েছে। সামগ্রিক ভাবে শারীরিক অবস্থারও উন্নতি হচ্ছে ক্রমশ। এই পরিস্থিতিতে উঠে এসেছে তাঁর বাড়ি ফেরার প্রসঙ্গ। কবে বালিগঞ্জের পাম অ্যাভিনিউয়ের ফ্ল্যাটে ফিরতে পারবেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী, তাঁর চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা চিকিৎসকেরা অবশ্য এই প্রশ্নের সরাসরি কোনও উত্তর দেননি। কেবল জানিয়েছেন, সোমবার বৈঠকে বসবে বুদ্ধদেবের চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা মেডিক্যাল বোর্ড।
গত শনিবার ফুসফুস এবং শ্বাসনালীতে গুরুতর সংক্রমণ নিয়ে আলিপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় বুদ্ধদেবকে। শনিবার রাতে তাঁকে দেওয়া হয় ‘ইনভেসিভ ভেন্টিলেশনে’। ৪৮ ঘণ্টা ভেন্টিলেশনে থাকার পর তাঁকে আবার ফিরিয়ে দেওয়া হয় ‘নন-ইনভেসিভ ভেন্টিলেশনে’। এখনও তাঁকে সে ভাবেই রাখা হয়েছে। তবে সাত দিন হাসপাতালে কাটানোর পর বুদ্ধদেবের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে অনেকটাই। সংক্রমণের কারণে তাঁকে কড়া ডোজের অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়েছিল। স্যালাইনের মাধ্যমে তা চলছিল এত দিন। এক সপ্তাহ পর শনিবার তাঁর অ্যান্টিবায়োটিকের ডোজ শেষ হয়েছে। তার পরেই খুলে ফেলা হয়েছে স্যালাইনের নলও। বস্তুত, শরীরে একাধিক নল লাগানো নিয়ে বার বার আপত্তি জানিয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁকে খেতেও হচ্ছে নলের মাধ্যমেই। ডাক্তারি পরিভাষায় যাকে বলা হয় ‘রাইলস টিউব’। স্যালাইনের নল খোলা হলেও এখনও রাইলস টিউবের মাধ্যমেই খাওয়াদাওয়া করানো হচ্ছে। সদ্য সংক্রমণ থেকে সেরে ওঠার পর যে খুব একটা খেতে পারছেন, এমন নয়। তাঁর চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা অন্যতম ডাক্তার সৌতিক পাণ্ডা বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত অতটা খিদে ওঁর নেই। দীর্ঘ অসুস্থতা, এত ওষুধপত্র, অ্যান্টিবায়োটিক, ৪৮ ঘণ্টার জন্য ভেন্টিলেশন— সব মিলিয়ে এখনও ওঁর শরীর অনেকটা ভগ্ন।
বুদ্ধদেব নিজে মুখে খেতে পারেন। কিন্তু এই মুহূর্তে তাঁর মুখে সেই রুচি নেই। ফলে রাইলস টিউবই ভরসা চিকিৎসকদের। এর পাশাপাশি, বেশ কিছু দিন পর আচমকা মুখে খাওয়া শুরু করলে বিষম লেগে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে। সে জন্য হাসপাতালে বুদ্ধদেবের ‘সোয়ালো অ্যাসেসমেন্ট’ চলছিল। তা আগামিদিনেও নিয়মিত করানো হবে বলেই হাসপাতাল সূত্রে খবর। এই ধরনের থেরাপির মধ্যে দিয়ে বুদ্ধদেবের মুখ, গলার পেশির স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধি করার চেষ্টা হচ্ছে। যাতে তাঁর গিলতে কোনও সমস্যা না হয় এবং বাড়ি ফিরে সম্পূর্ণ সুস্থ মানুষের মতোই মুখ দিয়েই খেতে পারেন।