বন্ধের জেরে স্তব্ধ জঙ্গলমহলের জনজীবন
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বন্ধের জেরে স্তব্ধ জঙ্গলমহলের জনজীবন। ঝাড়গ্রাম জেলার ১৬টি জায়গায় পথ অবরোধ করেছেন আদিবাসী সমাজের মানুষ। রাজ্য সড়কের পাশাপাশি কলকাতা-মুম্বই, ৬ নম্বর জাতীয় সড়কেও চলছে অবরোধ। সকাল থেকে জেলা জুড়ে দোকানবাজার বন্ধ। ঝাড়গ্রাম শহরের জুবিলি মার্কেট, কোর্ট রোড, সব্জি মার্কেট, মাছবাজার-সহ রাস্তার উপরের সমস্ত দোকান বন্ধ। অবশ্য খোলা ওষুধের দোকান। ঝাড়গ্রাম শহরের প্রাণকেন্দ্র পাঁচমাথার মোড়ে সকাল হলেই দূরপাল্লার বাসের ভিড় থাকে। সেখানেও আজ যানবাহন কম। ঝাড়গ্রাম শহরে ঢোকার মুখে সারদাপীঠ মোড়ে ব্যারিকেড করে রাস্তা অবরোধ করছেন অবরোধকারীরা। বিনপুর ১ নম্বর ব্লকের দহিজুড়ি, লালগড়, রামগড়ে রাস্তা অবরুদ্ধ। বিনপুর ২ নম্বর ব্লকের শিলদা, বেলপাহাড়ি, চাকাডোবায় জারি অবরোধ। এ ছাড়াও জামবনি ব্লকের বিভিন্ন রাস্তা অবরুদ্ধ। আবার সাঁকরাইল, গোপীবল্লভপুরেও চলছে অবরোধ। ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের ফেকোঘাট এবং গজাশিমূলে অবরোধ করা হয়। তার জেরে রাস্তার দু’পাশে সারিবদ্ধ ভাবে দাঁড়িয়ে রয়েছে দূরপাল্লার বহু পণ্যবাহী লরি।
এ নিয়ে আদিবাসী কল্যাণ সমিতির ঝাড়গ্রাম শাখার চেয়ারপার্সন মনোজকুমার মান্ডি বলেন, ‘‘ক্ষত্রিয় কুড়মিদের সরকার চক্রান্ত করে তফসিলি উপজাতি ভুক্ত করতে চাইছে। তার প্রতিবাদে আমাদের সমস্ত আদিবাসীদের সংগঠন একত্রিত হয়ে ১২ ঘণ্টা বাংলা বন্ধের ডাক দেওয়া হয়েছিল। আজ সকাল থেকে বন্ধের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। বন্ধের মধ্যে জরুরি পরিষেবাগুলিকে আমরা ছাড় দিয়েছি। যেমন অ্যাম্বুল্যান্স, জলের গাড়ি এবং দুধের গাড়ি। খোলা ওষুধের দোকানও।’’
বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে বাঁকুড়া জেলায় ৪০টিরও বেশি জায়গায় রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান আন্দোলনকারীরা। এর জেরে রানিগঞ্জ-খড়্গপুর ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক, বাঁকুড়া-পুরুলিয়া ৬০-এ জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ হয়ে যায়। থমকে গিয়েছে বাঁকুড়া-শালতোড়া, বাঁকুড়া-কমলপুর, বাঁকুড়া-দুর্গাপুর, বাঁকুড়া-ঝাড়গ্রাম এবং বাঁকুড়া-রানিবাঁধ রাজ্য সড়কও। পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী সমাজের বাঁকুড়া জেলা শাখার সহ-সভাপতি দেশবন্ধু সিং সর্দার বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার সিআরআই রিপোর্টে বদল ঘটিয়ে আদিবাসী নয় এমন মানুষদের আদিবাসী তকমা দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। তার বিরুদ্ধেই আমাদের এই প্রতিবাদ।’’