লাইন সারিয়ে কবে স্বাভাবিক হতে পারে ট্রেন চলাচল
বিক্ষিপ্ত ভাবে পড়ে রয়েছে তিনটি ট্রেনের অংশ। বেঁকেচুরে যাওয়া কামরাগুলো চারটে লাইন জুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। ওড়িশার বালেশ্বরে দুর্ঘটনাস্থলের ছবিটা এককথায় এই রকমই। তবে ভয়াবহ দুর্ঘটনা, বিপুল সংখ্যক মানুষের প্রাণহানির পর এখন যে প্রশ্নটা উঠছে, তা হল ওই পথ দিয়ে দক্ষিণ ভারতগামী ট্রেন পরিষেবা আবার কবে স্বাভাবিক হবে? রেলের তরফে সরকারি ভাবে এখনও এই বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। তবে রেলের উদ্ধার সংক্রান্ত কাজের সঙ্গে যুক্ত এবং অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের একাংশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানিয়েছেন, অন্তত সোমবারের আগে ধ্বংসস্তূপ সরানো সম্ভব নয়। সে ক্ষেত্রে ট্রেন পরিষেবা স্বাভাবিক হতে পারে মঙ্গলবার।
রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন, হতাহতদের উদ্ধার করাকেই তাঁরা অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। দুর্ঘটনাস্থল থেকে আতঙ্কিত যাত্রীদের যে বক্তব্য পাওয়া গিয়েছে, তার নির্যাস অনেকটা এই রকম— ট্রেনের কামরা একটার গায়ে আর একটা উঠে পড়েছে। কোনওটা উল্টে গিয়েছে। তাদের চাকাগুলো উপরের দিকে। কয়েকটা পাশের নয়ানজুলিতে পড়ে। মালগাড়ির উপরে উঠে পড়েছে আস্ত একটা ইঞ্জিন। যেন উড়ে গিয়ে ঘাড়ের উপর চড়ে বসেছে! রেলের লাইন বলতে কিছুই নেই। সিমেন্টের স্লিপারগুলি ভেঙেচুরে, লোহার রড বেরিয়ে একেবারে কঙ্কালসার। উপড়ে গিয়েছে বিদ্যুতের খুঁটি। ইতস্তত ছড়িয়ে মৃতদেহ। সাদা কাপড়ে ঢাকা। তার মধ্যেই ভেসে আসছে কান্নার আওয়াজ। চিৎকার। আর্তনাদ। আর সব কিছু ছাপিয়ে অ্যাম্বুল্যান্সের সাইরেনের শব্দ।
এই লন্ডভন্ড চিত্রটাই বুঝিয়ে দিচ্ছে, উদ্ধারকাজে গতি আনলেও ট্রেন পরিষেবা আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে যথেষ্ট বেগ পেতে হবে রেল কর্তৃপক্ষকে। সে ক্ষেত্রে শনিবার দুপুরের মধ্যে হতাহতদের উদ্ধার করা গেলেও, ধ্বংসস্তূপ সরাতে আরও অন্তত ৪৮ ঘণ্টা লাগতে পারে রেল কর্তৃপক্ষের। শুক্রবারের পর শনিবারও এই রুট দিয়ে যাওয়া অধিকাংশ ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। কিছু ট্রেনের যাত্রাপথ পরিবর্তন করা হয়েছে।