একটানা সাড়ে ন’ঘণ্টা ব্যায়াম
দুই হাতের কবজি থেকে কনুই পর্যন্ত সমতলে ঠেকনা দেওয়া। পায়ের আঙুলের উপর ভর দিয়ে শরীরকে শূন্যে ভাসিয়ে সরল রেখায় ব্যায়াম করছেন এক ব্যক্তি। মেদ ঝরানোর জন্য সর্বজনবিদিত এই ব্যায়াম যে কতটা কষ্টসাধ্য তা যাঁরা করেছেন তাঁরাই জানেন।তবে জনৈক জোসেফ সালেক এই পজিশনে একটানা ৯ ঘণ্টা ৩৮ মিনিট ব্যায়াম করেছেন। চেক প্রজাতন্ত্রের নাগরিকের এই কীর্তিতে হতবাক বিশ্ব। এবং এই বিরল কীর্তিই তাঁকে এনে দিয়েছে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের স্বীকৃতি।
মেদ ঝরানো থেকে মেরুদণ্ডের জন্য এই পজিশনের ব্যায়াম খুবই কার্যকরী। বিশ্বে এর পরিচিতি প্লাঙ্ক পজিশন হিসেবে। তবে একটানা এই ব্যায়াম করা বেশ কঠিন। কারণ, শরীর শূন্যে ভেসে থাকার সময় সম্পূর্ণ ভারটি পড়ে পায়ের আঙুল ও দুই হাতের উপর। ফলে দ্রুত হাত ও পায়ে ব্যথা শুরু হয়ে যায়।
শারীরিক কষ্ট ও হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কায় বিশেষজ্ঞরাও পরামর্শ দেন, বাড়তি সময় না দিয়ে মিনিট ভাগ করেই ব্যায়ামটি করা উচিত। তবে চেক প্রজাতন্ত্রের এই ব্যক্তি সে সবই ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়েছেন। ক্যামেরার সামনে একটানা ৯ ঘণ্টা ৩৮ মিনিট ৪৭ সেকেন্ড ধরে প্লাঙ্ক পজিশনে ব্যায়াম করে গিয়েছেন।তাঁর জীবনের গল্প যেন রূপকথার মতো। জসকা নামে পরিচিত এই ব্যক্তি বলেন, ‘একটা সময় ছিল মদ ও ধূমপানে আসক্ত ছিলাম। ওজন স্বাভাবিকের থেকে ১৫ কেজি বেড়ে যায়। এরপর একটা বিপর্যয় জীবনদর্শনটাই বদলে দিয়েছিল’।
জসকার কথায়, ‘আরব আমিরশাহী থেকে শ্রীলঙ্কা যাওয়ার পথে বিমানবন্দরে আটক হই।’ তাঁর দাবি, ‘অন্য এক কুখ্যাত অপরাধী ভেবে আমায় আটক করা হয়েছিল। দীর্ঘ সময় জেলে কাটিয়েছি।’ওই সময়টাই আমূল বদলে দিয়েছে জসকাকে। বন্দিদশা কাটার পর দেশে ফিরে তিনি শরীরচর্চায় মন দেন। তবে একটানা সাড়ে নয় ঘণ্টা ব্যায়াম করা ছেলেখেলা ছিল না।গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের খাতায় নাম তোলা জোসেফ বলেন, ‘শুরু থেকে যতটা সম্ভব শরীরকে চাপমুক্ত রাখছিলাম। তবে সপ্তম থেকে অষ্টম ঘণ্টার মধ্যে যে কী কী কষ্ট ভোগ করেছি বলে বোঝাতে পারব না’।