দলের সেরার শিরোপা কিন্তু রোহিতেরই প্রাপ্য
২০২২ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। সেমিফাইনালে কিছু ক্ষণ আগেই ইংল্যান্ডের কাছে ১০ উইকেটে হেরেছে দল। অধিনায়ক হিসাবে প্রথম আইসিসি প্রতিযোগিতায় ব্যর্থ রোহিত শর্মা। ঠিক এক বছর পরে আশা জাগিয়ে আবার ব্যর্থ রোহিত। দেশের মাটিতে এক দিনের বিশ্বকাপ টানা ১০ ম্যাচ জেতার পরে ফাইনালে হারতে হয়েছে। আরও এক বার অধরা থেকে গিয়েছে বিশ্বকাপ। কিন্তু তার পরেও জিতে গিয়েছেন রোহিত। জিতেছেন অন্য এক লড়াইয়ে। চলতি প্রতিযোগিতায় ভারতের সেরা ব্যাটার বিরাট কোহলি। সেরা বোলার মহম্মদ শামি। কিন্তু তার পরেও দলের সেরার শিরোপা কিন্তু রোহিতেরই প্রাপ্য।
গত বছর টি-টোয়েন্টি ফাইনালের পরে সতীর্থ দীনেশ কার্তিককে রোহিত বলেছিলেন, ‘‘এই দলটার মানসিকতা বদলাতে হবে।’’ শুধু বলেই ক্ষান্ত থাকেননি তিনি। সেটা করে দেখিয়েছেন। আর তার জন্য সবার আগে বদলেছেন নিজের মানসিকতা। ফর্মে থাকা রোহিত কতটা ভয়ঙ্কর তা সবাই জানেন। কিন্তু ইনিংসের শুরুতে একটু সময় নিতেন রোহিত। এক দিনের ক্রিকেটে যে তিনি তিন বার দ্বিশতরান করেছেন, সেই সব ম্যাচের শুরুতেও রোহিতকে ধীরে সুস্থে খেলতে দেখা গিয়েছে। সেটাই বদলে ফেলেছেন রোহিত। চলতি বিশ্বকাপে প্রথম বল থেকে চলেছে রোহিতের ব্যাট। প্রতিপক্ষ বোলার শাহিন শাহ আফ্রিদি, না ট্রেন্ট বোল্ট, দেখেননি রোহিত। মারার বল মেরেছেন। একটু হাত খোলার সুযোগ পেলেই বল গিয়ে পড়েছে বাউন্ডারির বাইরে। প্রতিটি ম্যাচে পাওয়ার প্লে-তে বড় রান তুলেছে ভারত। সেটাই সুবিধা করে দিয়েছে। শেষ পর্যন্ত ৩৫০-৪০০ রান করতে সমস্যা হচ্ছে না।
রাউন্ড রবিন লিগের প্রতিটি ম্যাচে সহজ জয়ের পরে রোহিত জানতেন, সেমিফাইনালে কড়া টক্কর হবে। বিশ্বকাপের নক আউট হলেও খেলার ধরন বদলাননি রোহিত। প্রথম ওভারে বোল্টকে আক্রমণ করেছেন। থিতু হতে দেননি মিচেল স্যান্টনারকেও। ২৯ বলে ৪৭ রান করেছেন। কিন্তু সেই রানের মূল্য অনেক বেশি। তাঁর ভয়ডরহীন মনোভাব বাকিদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়েছে। সবাই আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলছেন। রোহিতই যেন বদলে দিয়েছেন গোটা দলকে। এই দল ভয় পায়নি। কোনও পরিস্থিতিতে পিছিয়ে পড়েনি। নিজেদের উপর আস্থা রেখে খেলেছে। রোহিতের প্রশংসা শোনা গিয়েছে বিরাট থেকে শুভমন প্রত্যেকের মুখে। প্রাক্তন ক্রিকেটারেরাও এক বাক্যে স্বীকার করে নিয়েছেন যে রোহিতই পার্থক্যটা গড়়ে দিয়েছেন।