শরণার্থী বোঝাই নৌকা
নিরাপদ জীবনের সন্ধানে অকাল মৃত্যু! রবিবার ইয়েমেন উপকূলে শরণার্থী বোঝাই নৌকা ডুবে অন্তত ৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। দুর্ঘটনার পর অন্তত ৭৪ জন এখনও নিখোঁজ। সোমবার মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনার কথা প্রকাশ্যে এনেছে রাষ্ট্রসংঘের অভিবাসন সংস্থা। দাবি করা হচ্ছে, ওই নৌকায় ছিলেন ১৫৪ জন যাত্রী। যাঁদের বেশিরভাগই আফ্রিকান।
জানা গিয়েছে, দক্ষিণ ইয়েমেনি প্রদেশ আবিয়ানের কাছে অ্যাডেন উপসাগরে এই দুর্ঘটনা ঘটে। ওই অঞ্চলের স্বাস্থ্য অধিকর্তা আবদুল কাদের বাজামেল জানা, দুর্ঘটনার পর মাত্র ১০ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এর মধ্যে ৯ জন ইথিয়োপিয়া ও একজন ইয়েমেনের নাগরিক। অসংখ্য মানুষের কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। গভীর রাত পর্যন্ত চালানো হয়েছে তল্লাশি অভিযান। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের তরফে জানা যাচ্ছে, ওই অঞ্চলে দেহ উদ্ধারের কাজ এখনও জারি রয়েছে।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) হর্ন অফ আফ্রিকা ও ইয়েমেনের মধ্যবর্তী এই সমুদ্রপথকে অত্যন্ত বিপজ্জনক বলে সতর্ক করেছেন। নিরাপদ জীবন ও কাজের সন্ধানে হাজার হাজার মানুষ ইথিওপিয়া এবং সোমালিয়া থেকে এই পথে ইয়েমেনে প্রবেশের চেষ্টা করেন। তাদের লক্ষ্য হয় ইয়েমেন হয়ে সৌদি আরব বা অন্যান্য উপসাগরীয় দেশগুলিতে পৌঁছন। আইওএম-এর বিবৃতি অনুযায়ী, ২০২৩ সালে অত্যন্ত বিপজ্জনক এই পথ ধরে আসেন ৯৭,২০০ জন। ২০২৪ সালে তা কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৬০ হাজার। গত বছর এই মরণ যাত্রায় মৃত্যু হয়েছে ৫৫৮ জনের নিখোঁজ হয়েছে ২,০৮২ জন। ইয়েমেনের মানবিক ও রাজনৈতিক সংকটের মধ্যেও এই যাত্রায় ভাটা পড়েনি। সমুদ্রপথে ব্যাপক টহলের জেরে অভিবাসী আগমনের সংখ্যা কমেছে।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের এপ্রিলে হাউথি বিদ্রোহী এবং ইয়েমেনের স্বীকৃত সরকারের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ায় সহিংসতা তুলনামূলকভাবে কমেছে। এই অবস্থায় কড়াকড়িও বেড়েছে। নতুন জীবনের সন্ধানে এসে বহু অভিবাসী ইয়েমেনে আটক হন। আইওএম-এর রিপোর্ট বলছে বর্তমানে প্রায় ৩৮০,০০০ শরণার্থী এবং অভিবাসী ইয়েমেনে রয়েছেন।