জল জমে বিপর্যস্ত পাকিস্তান
প্রকৃতির রোষে কার্যত নরকে পরিণত হয়েছে পাকিস্তান। গত জুন মাস থেকে এখনও পর্যন্ত প্রবল বৃষ্টির জেরে হড়পা বান ও ভূমিধসে বেড়েই চলেছে মৃত্যু মিছিল। পাকিস্তানের জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগের রিপোর্ট বলছে গত জুন মাস থেকে এখনও পর্যন্ত দুর্যোগের জেরে দেশে মৃত্যু হয়েছে ৬৫৭ জনের। আহত এক হাজারেরও বেশি। বহু মানুষ এখনও নিখোঁজ।
পাক প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর ভয়াবহ বৃষ্টির কবলে পড়েছে পাকিস্তান। যার ফল ভুগতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। পাকিস্তানের জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগের মুখপাত্র তৈয়ব শাহ বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ৬০ শতাংশের বেশি বৃষ্টি হয়েছে যা বেনজির। আগামী ২২ আগস্টেও একাধিক জায়গায় ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি রয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসেও দুই থেকে তিনবার ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। প্রবল বৃষ্টির জেরে এখনও ৬৫৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ১৭১ জন শিশু, ৯৪ মহিলা ও ৩৯২ জন পুরুষের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া গত ২৬ জুন থেকে এখনও আহতের সংখ্যা হাজারের বেশি।
দুর্যোগের জেরে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে খাইবার পাখতুনখোয়ায়। শুধুমাত্র এই প্রদেশে হড়পা বান ও অন্যান্য দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ৩৯৪ জনের। এর মধ্যে ৫৯ জন শিশু ও ৪৩ জন মহিলা। এরপরই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশ। সেখানে মৃতের সংখ্যা ১৬৪। সিন্ধ অঞ্চলে মৃত্যু হয়েছে ২৮ জনের। এতো গেল পাকিস্তান। পাক অধিকৃত কাশ্মীরেও দুর্যোগের প্রকোপ পড়েছে ব্যাপকভাবে। গিলগিট-বালটিস্থানে মৃত্যু হয়েছে ৩২ জনের। খাইবার পাখতুনখোয়ার বুনের ও শাংলা জেলায় এখনও নিখোঁজ ১৫০ জন। শুধুমাত্র বুনেরে সংখ্যাটা ৮৪।
খাইবার পাখতুনখোয়ার বেহাল অবস্থা সামাল দিতে জোরকদমে উদ্ধার কাজ শুরু করেছে প্রশাসন। এলাকায় অস্থায়ী তাঁবু তৈরির পাশাপাশি ওষুধ ও প্রয়োজনীয় খাবার পাঠানো হচ্ছে। ভয়াবহ হড়পা বানে ৬১টি সরকারি স্কুল পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। বিপুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৪১৪টি স্কুল। মাত্র ৩ মাসের বর্ষায় ভয়াবহ এই অবস্থা সামাল দিতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে শাহবাজ শরিফের সরকার।