পাকিস্তানে ভারতীয় দূতাবাস
ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের উত্তাপ আরও এক দাগ চড়ল। ভারতের উপর প্রতিশোধের নেশায় ইসলামাবাদ ভারতীয় হাইকমিশনের কর্মীদের ন্যূনতম প্রয়োজন এবং অত্যাবশ্যকীয় সামগ্রী বন্ধ করার নীচ আচরণ দেখাচ্ছে। দূতাবাস কর্মীদের উপর এরকম অমানবিক আচরণের তীব্র নিন্দা করেছে ভারত। শীর্ষ পদাধিকারীরা এ ধরনের কাজকে ইচ্ছাকৃত, পূর্বপরিকল্পিত এবং ভিয়েনা চুক্তি ভঙ্গ বলে বর্ণনা করেছেন।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর সফল অপারেশন সিঁদুর অভিযান এবং পহলগামে জঙ্গিহানার পর সিন্ধু জলচুক্তি রদ করার ঘটনার আক্রোশ মেটাচ্ছে পাকিস্তান। শীর্ষস্থানীয় সরকারি সূত্র একটি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে, এ ধরনের পদক্ষেপ বা নীচ আচরণকে সস্তা প্রতিশোধ বলে। এর পিছনে রয়েছে পাকিস্তানের চর সংস্থা ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স বা আইএসআই। ওরা ইসলামাবাদে বসবাস করা ভারতীয় দূতাবাস কর্মীদের জীবনযাপন ও কাজের পরিবেশে কাঠি করার চেষ্টা চালাচ্ছে।
সূত্রে জানা গিয়েছে, সুই নর্দার্ন গ্যাস পাইপলাইন্স লিমিটেড ভারতীয় হাইকমিশনের বাড়িগুলিতে গ্যাস সরবরাহ করত। কিন্তু, সেই গ্যাস সরবরাহ আচমকা বন্ধ করা হয়েছে। এটা আর কিছু নয়, আইএসআইয়ের অলক্ষ্য নির্দেশে ইচ্ছাকৃতভাবে তা করা হয়েছে। স্থানীয় গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবসায়ীরা আগে কমিশনকে রান্নার গ্যাস সরবরাহ করতেন। তাঁদেরও পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ হুকুম দিয়ে দিয়েছে যে, কোনও ভারতীয় দূতাবাস কর্মীর বাড়িতে-অফিসে সিলিন্ডার সরবরাহ না করতে। এর ফলে কূটনীতিক ও তাঁদের পরিবারকে খোলা বাজারে চড়া দামে গ্যাস কেনার জন্য হাহাকার করে বেড়াতে হচ্ছে। কিন্তু, কেউই তা বেচতে রাজি হচ্ছে না।
শুধু জ্বালানি নয়, হেনস্তা চলছে পানীয় জল নিয়েও। হাইকমিশনে বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহের চুক্তিভিত্তিক সরবরাহকারী কোম্পানি ডেলিভারি দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। এমনকী ইসলামাবাদের সব মিনারেল ওয়াটার সরবরাহকারী ও বণ্টন কোম্পানিকে ভারতীয় হাইকমিশনে মিনারেল ওয়াটার না দিতে বলে দিয়েছে ইসলামাবাদ কর্তৃপক্ষ। এর ফলে কর্মীরা ব্যাপক অসুবিধায় পড়েছেন। স্থানীয় কলের জল বহুবার ফুটিয়ে-ছেঁকে না নিলে মোটেই খাওয়ার উপযোগী নয়।
হাইকমিশন থেকে যা খবর মিলেছে তা হল, রোজকার খবরের কাগজ বিক্রেতাদেরও ভারতীয় দূতাবাসে যেতে নিষেধ করে দিয়েছে প্রশাসন। এর স্পষ্ট উদ্দেশ্য হচ্ছে যে, ভারতীয় কূটনীতিকরা যাতে প্রতিদিনের স্থানীয় কাগজগুলি কী লিখছে, কী ঘটছে তা জানতে না পারেন। এককথায় পাকিস্তানের খবরাখবর সম্পর্কে তাঁদের পুরো অন্ধকারে রাখতে চাওয়া। সরকারি সূত্র জানাচ্ছে, এ ধরনের কাজ ভিয়েনা চুক্তির পরিপন্থী। যেখানে আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে বিদেশি দূতাবাস কর্মীদের সুরক্ষা ও পদমর্যাদা বজায় রাখা সংশ্লিষ্ট দেশের দায়িত্ব ও কর্তব্য।