সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক বাড়ি
সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক বাড়ি ভাঙছে বাংলাদেশ সরকার। ইতিমধ্যেই এই নিয়ে সরব হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমত বন্দ্যোপাধ্যায়। ভারতের তরফ থেকেও বাংলাদেশকে হুঁশিয়ারী দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রের তরফ থেকে বাংলাদেশকে অনুরোধ করা হয়েছে ময়মহনসিংহে উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর স্মৃতিবিজড়িত এই বাড়ি যেন না ভাঙে ইউনূস সরকার। প্রয়োজনে বাড়িটির সংস্কারের সমস্ত রকম আর্থিক সাহায্য় করতে প্রস্তুত ভারত সরকার।
হরিকিশোর রায় চৌধুরী রোডে অবস্থিত উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর স্মৃতিবিজড়িত এই বাড়ি বাংলাদেশ শিশু অ্যাকাডেমির ভবন হিসেবে ব্যবহৃত হত। সেটাই ভাঙার নির্দে দিয়েছিল মহম্মদ ইউনূসের প্রশাসন। কিন্তু কেন ভাঙতে হচ্ছে এই স্মৃতি বিজারিত বাড়ি। ঢাকার শিশু বিষয়ক আধিকারিক মহম্মদ মেহেদি জামান বাংলাদেশের সংবাদপত্র ডেইলি স্টারকে বলেন যে বিগত ১০ বছর ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। বাড়িটি যেকোনও মুহূর্তে ভেঙে পড়ে বিপদ ঘটতে পারে। তিনি জানান, এর জায়গায় সেমি-কংক্রিটের একটি বিল্ডিং তৈরি করা হবে। এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই সমাজ মাধ্যমে প্রতিবাদ করে পোস্ট করেন রাজ্যের মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। তারপরই কেন্দ্রের তরফ থেকে এই বাড়ির ঐতিহাসিক গুরুত্ব, বাংলার সংস্কৃতির সঙ্গে যোগকে উল্লেখ করে বলা হয় যে এই বাড়ি ভাঙার সিদ্ধান্ত যেন পুনর্বিবেচনা করা হয়। তার বদলে সংস্কার ও পুনর্নির্মাণ করে সাহিত্য়ের মিউজিয়াম গড়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়, যা দুই দেশের সাংস্কৃতিক মেলবন্ধকেই তুলে ধরবে। ভারত সরকারের তরফে সত্য়জিৎ রায়ের পৈতৃক ভিটে সংস্কারের কাজে সহযোগিতার প্রস্তাবও দেওয়া হয়।
এর আগে জুন মাসে সিরাজগঞ্জে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পৈতৃক ভিটেতে ভাঙচুর চালানো হয়। তার আগে এপ্রিলে ঢাকার মিরপুরে একটি শহিদ স্মৃতি স্তম্ভ ও লালমনিরহাটে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি মঞ্চের একাংশও ভেঙে ফেলা হয়েছিল। এবার সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক বাড়ি ভেঙে কি ইউনূস সরকার ভারতের সঙ্গে আবার সঙ্ঘাতে আসতে চাইছে নাকি ভারতের সাহায্য নিয়ে ওই স্মৃতি পুননির্মাণে রাজি হয় সেটাই এখন দেখার বিষয়। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের পুরাতত্ত্ব বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বাড়িটি ১০০ বছরের বেশি পুরনো। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর বাড়িটি সেদেশের সরকারের হাতে আসে।