ভারতে চিনা বিদেশি মন্ত্রী
ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কচাপের ফলে ভারত-চিন সম্পর্কে নতুন করে পাতা গজাচ্ছে। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং য়ি-র বৈঠকের পরদিন, মঙ্গলবার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সঙ্গে আলোচনায় ফের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও মধুরের দিকে গড়াল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও পাকিস্তানের রক্তচাপ বাড়িয়ে দীর্ঘদিনের ভারত-চিন সীমান্ত উত্তেজনার পাথর যেন ঘাড় থেকে নামার ইঙ্গিত মিলল।
এদিন বৈঠকের শেষে দোভাল বলেন, ভারত-চিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক অনেক উন্নত হওয়ায় দুই দেশই লাভবান হয়েছে। গত অক্টোবরে সেনা সমঝোতার পর থেকে সীমান্ত এলাকায় শান্তি ও সুস্থিতি ফিরেছে। শুধু প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখাতেই নয়, বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমরা উপকৃত হয়েছি। দোভাল এবং ওয়াং এদিন নয়াদিল্লিতে বিশেষ প্রতিনিধিত্ব মেকানিজমের অধীনে ২৪-তম বৈঠক করেন।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশনের সম্মেলনে যোগ দিতে চিন সফর করবেন। তার দিন পনেরো আগে দোভাল-ওয়াং বৈঠকে দীর্ঘদিনের কাঁটা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা নিয়ে ফের এক দফা কথা হল। এই বৈঠকের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করে দোভাল বলেন, গত ৯ মাস ধরে দুদেশের সম্পর্কে উন্নতি ঘটছে। সীমান্তে শান্তি-সুস্থিতি বজায় রয়েছে। আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কও আগের থেকে অনেক মজবুত হচ্ছে।
দোভাল জানান, প্রধানমন্ত্রী মোদী এসসিও সম্মেলনে যোগ দিতে আগামী ৩১ অগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর চিনের তিয়ানজিন-এ যাবেন। ওয়াং এই বৈঠক প্রসঙ্গে বলেন, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় যে অঘটন ঘটেছিল তাতে দুদেশেরই ক্ষতি হয়েছে। এতে ভারত কিংবা চিন কোনও দেশেরই সাধারণ মানুষের কোনও উপকারে আসেনি। সীমান্তে এখন যে সুস্থিতি বজায় রয়েছে তাকে আমরা আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাই। এখন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে এসে দাঁড়িয়েছে। যাতে উন্নয়ন ও বিকাশই দুদেশের অন্যতম লক্ষ্য। মজবুত সম্পর্ক আমাদের দীর্ঘমেয়াদে সুফল দেবে।
ভারতকে চিন জানিয়ে দিয়েছে, তারা এদেশের উপর থেকে সার, রেয়ার আর্থ ম্যাগনেট ও খনিজ দুষ্প্রাপ্য ধাতু এবং সুড়ঙ্গ খোঁড়ার মেশিন রফতানি বন্ধের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে চলেছে। গত মাসে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর সেদেশের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং য়ি-এর সঙ্গে বৈঠকে এই গুরুত্বপূর্ণ সামগ্রীতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিলেন।
চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং য়ি বর্তমানে দুদিনের সফরে নয়াদিল্লিতে রয়েছেন। সোমবার তাঁদের মধ্যে আলোচনায় য়ি আশ্বস্ত করেছেন জয়শঙ্করকে। তিনি জানান, ভারতের আর্জি অনুযায়ী বেজিং কর্তৃপক্ষ নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে পদক্ষেপ শুরু করেছে। ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই তিনটি অতি গুরুত্বপূর্ণ সামগ্রী জাহাজে উঠতে শুরু করছে।