বন্ধু মোদী'র প্রশংসা ট্রাম্পের, নাকি হুঁশিয়ারি?
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বুধবার ওয়াশিংটন থেকে এমনই খবর মিলেছে। জানা গেছে, মোদীকে তিনি 'মহান নেতা' ও নিজের 'বন্ধু' বলেও উল্লেখ করেছেন। তবে রাজনীতি-বোদ্ধারা অনেকেই দাবি করছেন, নিছক এই প্রশংসার আড়ালে কড়া হুঁশিয়ারিও আছে। কারণ ট্রাম্প হেসে বলেছেন, 'আমি মোদীর রাজনৈতিক কেরিয়ার খতম করতে চাই না।'
এই কথাতেই স্পষ্ট, ভারত যদি তেল কেনা নিয়ে রাশিয়ার দিকেই ঝুঁকে থাকে, বা আমেরিকার কথা না শোনে, তাহলে ট্রাম্পও মোটেও হাত গুটিয়ে বসে থাকবেন না। এমন কোনও বড় পদক্ষেপই করবেন, যা মোদীকে বিপদে ফেলে তথা ভারতের রাজনীতিকেও প্রভাবিত করে!
জানা গেছে, এদিন একই সঙ্গে ট্রাম্প দাবি করেছেন, ভারত তাঁকে আশ্বাস দিয়েছে— তারা রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করবে। ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ট্রাম্প বলেন, 'মোদী একজন মহান মানুষ। উনি আমাকে ভালবাসেন।' এরপরই হেসে যোগ করেন, কেরিয়ার নষ্ট করতে না চাওয়ার কথাটা।
ট্রাম্পের কথায়, 'আমি বহু বছর ধরে ভারতকে দেখছি। অসাধারণ দেশ। এক সময় প্রতি বছর একজন নতুন নেতা পেত ভারত, কিন্তু এখন আমার বন্ধু অনেক দিন ধরেই আছেন।'
মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও জানান, মোদী তাঁকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ভারত আর রাশিয়া থেকে তেল কিনবে না। তিনি বলেন, 'উনি নিশ্চিত করেছেন যে, রাশিয়া থেকে তেল কেনা হবে না। এটা একেবারে সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ করা যায় না, কিন্তু প্রক্রিয়াটা দ্রুত শেষ হবে।'
ট্রাম্পের মতে, এই সিদ্ধান্ত রাশিয়ার ওপর চাপ সৃষ্টি করবে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে। তাঁর ভাষায়, 'এটা একটা বড় পদক্ষেপ। রাশিয়াকে চাপে ফেলতে এটা প্রয়োজন।'
ভারতের প্রতিক্রিয়া
ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের বক্তব্য, ভারতের জ্বালানি নীতির মূল লক্ষ্য সব সময়ই ভারতীয়দের স্বার্থ সুরক্ষিত রাখা, কোনও বিদেশি চাপ নয়।
বুধবার এক বিবৃতিতে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জায়সবাল বলেন, 'ভারত একটি বড় তেল ও গ্যাস আমদানিকারী দেশ। অস্থির পরিস্থিতিতে ভারতীয় উপভোক্তার স্বার্থ রক্ষাই আমাদের নিরবচ্ছিন্ন অগ্রাধিকার। আমাদের আমদানি নীতির লক্ষ্যই এটা।'
তিনি আরও যোগ করেন, 'স্থিতিশীল দামের নিশ্চয়তা এবং নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ, এই দুই লক্ষ্যই আমাদের জ্বালানি নীতির ভিত্তি। সেই কারণে আমরা সবসময় জ্বালানির উৎসে বৈচিত্র্য আনতে চাই, বাজারের অবস্থার উপর নির্ভর করে।'
পাশাপাশি তাঁর এও বক্তব্য, 'আমেরিকার ক্ষেত্রেও গত এক দশকে আমরা ধারাবাহিকভাবে জ্বালানি আমদানি বৃদ্ধি করেছি। বর্তমান প্রশাসনও ভারতের সঙ্গে জ্বালানি সহযোগিতা গভীর করার ইচ্ছা দেখিয়েছে। আলোচনা চলছে।'