ছটপুজোয় মেনে চলুন এই নিয়মগুলি
দুর্গাপুজো ও কালীপুজোর পর বাংলায় উৎসবের মরশুমের শেষ পর্বে আসে ছটপুজো (Chhath Puja rituals)। মূলত অবাঙালি সম্প্রদায়ের মধ্যে জনপ্রিয় এই পুজো সাধারণত সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধির কামনায় করা হয়। যদিও পুজো করা আনন্দের, তবে নিয়ম মেনে পালন করাটাই পুণ্যের মূল। ছটপুজো সাধারণত চারদিন ধরে চলে। প্রথম দিন ‘নহায় খায়’, দ্বিতীয় দিন ‘খরনা’, তৃতীয় দিন ‘সন্ধ্যা অর্ঘ্য’ এবং শেষ দিন ‘সূর্যোদয় অর্ঘ্য’ অনুষ্ঠিত হয়।
ছটপুজোর সবচেয়ে বড় কাজ হল সূর্য দেবতাকে সন্তুষ্ট করার জন্য ‘ছটের ডালা’ সাজানো। উৎসবকে নানা নামে ডাকা হয়- ‘ছটি’, ‘ছট পরব’, ‘ছট পূজা’, ‘ডালা ছট’ বা ‘সূর্য ষষ্ঠী’। এই উৎসব মূলত সূর্যকে ধন্যবাদ জানানো এবং তার কাছে প্রার্থনা করার দিন। যাঁরা ব্রত রাখেন তাঁরা প্রায় ৪০ ঘণ্টা নির্জলা উপবাস করেন (Chhath Puja fasting)। শেষ দিনে সূর্যোদয় অর্ঘ্য দেওয়ার পর প্রসাদ খেয়ে উপবাস ভাঙা হয়।
ছটপুজোর প্রথম দিন সকালে ব্রতী মহিলারা স্নান করে পরিষ্কার কাপড় পরে রান্না শুরু করেন। দুপুরের খাবারে ভাতের সঙ্গে লাউয়ের তরকারি, চানা ডাল ও নানারকম সবজি থাকে। তবে এই রান্নায় নুন ব্যবহার করা হয় না। ওইদিন পরিবারের সবাই দুপুরে লাউ ভাত খান। রাতে নিরামিষ খাবার খেতে পারেন।
দ্বিতীয় দিন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ব্রতীরা পুরো দিন উপবাস করেন। বাড়িতে সূর্য দেবতার পুজো হয়। ক্ষীর, রুটি, কলা দিয়ে সূর্য দেবতার পুজো করা হয়। এরপর ঠেকুয়া বানানো এবং ডালা সাজানো শুরু হয়। বিকেলে জলাশয় বা পুকুরে গিয়ে ডুবন্ত সূর্যকে পুজো করা হয় এবং প্রদীপ ভাসিয়ে দেওয়া হয়। ডালায় ফলের সঙ্গে ঠেকুয়াও রাখা হয়।
শেষ দিনে সূর্যোদয়ের আগে ব্রতীরা আবার জলাশয়ে যান এবং অর্ঘ্য দেন। এরপর পুজো শেষ হয়। বাড়ি ফেরার পর প্রায় ৪০ ঘণ্টা পর ঠেকুয়া, আদা, জল এবং গুড় খেয়ে উপবাস ভাঙা হয়।
ছটপুজো শুধু রীতিনীতির অনুষ্ঠান নয়, এটি জীবনে সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি আনার এক উৎসব। যারা নিয়ম মেনে ব্রত পালন করেন, তারা পুজোর পূর্ণ আনন্দ ও আশীর্বাদ অনুভব করেন।