স্প্রাউট স্যালাড খাওয়া কি আদৌ স্বাস্থ্যকর?
খেলোয়াড় থেকে শুরু করে বডি বিল্ডার, বা নিদেন পক্ষে যাঁরা নিজেদের সুস্থ রাখতে পছন্দ করেন তাঁদের কাছে অত্যন্ত প্রিয় একটি খাদ্য হল স্প্রাউট স্যালাড অথবা অঙ্কুরিত শস্য। এমনকি অনেকের মতেই এই খাদ্যটি হল আদতে সুপারফুড। যদিও পুষ্টিবিদ খুশি ছাবরা কিন্তু বলছেন একদম অন্য কথা। সম্প্রতি সমাজমাধ্যমে এই বিষয়ে একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করেছেন তিনি। তাঁর মতে স্প্রাউট আমরা কীভাবে খাচ্ছি তার ওপরেই নির্ভর করে সেটি আমাদের শরীরে পুষ্টি দেবে, না হজমের গোলমাল ডেকে আনবে। পেট ফাঁপা, গ্যাস থেকে শুরু করে ব্যাকটেরিয়ার ঝুঁকি কী কী হতে পারে?
ইনস্টাগ্রামে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে পুষ্টিবিদ খুশি ছাবরা সতর্ক করেছেন, স্প্রাউট খাওয়ার ভুল পদ্ধতি সম্পর্কে। ভিডিয়োর ক্যাপশনে তিনি লেখেন, “মনে রাখবেন, সব কিছু কাঁচা আর সবুজ অবস্থায় খেতে নেই। বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে ব্যালান্স করে খাওয়াটাই আসল!”
কাঁচা স্প্রাউট পেটের কী ক্ষতি করতে পারে?
খুশি ছাবরা জানান, স্প্রাউট সবচেয়ে পুষ্টিগুণে ভরপুর খাবারগুলির মধ্যে একটি। প্রোটিন, ফাইবার ও ভিটামিনে সমৃদ্ধ। কিন্তু অনেকেই কাঁচা স্প্রাউট খাওয়ার পর গ্যাস, পেট ফাঁপা বা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভোগেন। আসলে কাঁচা স্প্রাউট হজম করা কঠিন। গুরুপাক খাবার। আর রান্না না করলে তাতে নানা ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে, যা পেটের সমস্যা বাড়ায়।
এতে থাকে ফাইবার, এনজাইম, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি। তবে ৬০–৬৫% অংশই কার্বোহাইড্রেট থাকে। তাই বেশি খেলে উলটো প্রভাব ফেলতে পারে। তাছাড়া স্প্রাউট উষ্ণ, আর্দ্র পরিবেশে অঙ্কুরিত হয়, তাই সঠিকভাবে না ধুলে বা না রাখলে তাতে E. coli বা Salmonella-র মতো ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে পারে।
স্প্রাউট খাওয়ার সঠিকভাবে উপায় কোনটি?
খুশির মতে, কিছু সহজ পদ্ধতি মানলেই স্প্রাউট খেয়ে আর পেট খারাপ হবে না। হালকা ভাপে বা রান্না করে খাওয়া। এতে শক্ত ফাইবার নরম হয় ও ব্যাকটেরিয়া কমে যায়। হজমে সহায়ক মশলা ব্যবহার করা যেতে পারে। আদা, জিরে, গোলমরিচ, বিট লবণ—এসব হজমে সাহায্য করে। পরিমাণের দিকে নজর রাখা প্রয়োজন। দিনে অর্ধেক থেকে এক কাপ যথেষ্ট। অতিরিক্ত খেলে উলটো ফল হতে পারে।
এছাড়াও পর্যাপ্ত প্রোটিনের সঙ্গে স্প্রাউট খেলে ভাল। দই, পনির বা ডিমের সঙ্গে খেলে খাবারের ভারসাম্য বজায় থাকে। এই ছোট ছোট পরিবর্তনেই স্প্রাউটের পুষ্টিগুণ ভাল থাকে অথচ হজমের ঝামেলাও কমে।
পুষ্টিবিদ বলেন, স্প্রাউটকে আমরা কাঁচা খাবার হিসেবে দেখি, তাই অনেকেই ভাবেন কাঁচা খেলেই সবচেয়ে ভাল। কিন্তু বাস্তবে কাঁচা খাবার হজমে কঠিন হয়, আর ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের আশঙ্কাও বেশি থাকে। বিশেষত যাদের হজমের সমস্যা বা অন্ত্র দুর্বল, তাদের জন্য এটি বিপজ্জনক।