তৈলাক্ত ত্বকের সমস্যা মেটাতে কোনটা বেশি কার্যকরী?
তৈলাক্ত ত্বকের সমস্যায় ভোগেন অনেকেই। বিশেষ করে যাঁদের মাথার ত্বক থেকেও অতিরিক্ত পরিমাণে তেল নিঃস্বরণ হয় তাঁদের জন্য সমস্যা আরও খানিকটা বেশি। মাথার ত্বকে তেল ও সেবামের অতিরিক্ত নিঃসরণের ফলে খুশকি, চুলকানি, চুলের ডগা ভেঙে পড়ার মতো নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর মূল কারণ তেল ও সেবাম ময়লা, ধুলো, মৃত কোষ ও অন্যান্য অশুদ্ধি আকর্ষণ করে মাথার ত্বককে চিটচিটে করে তোলে। ফলিকল বা লোমকূপ বন্ধ হয়ে যায়। একবার লোমকূপ বন্ধ হয়ে গেলে তা মাথার ত্বকে জ্বালাভাব, খুশকি, এমনকি ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাসের বৃদ্ধি ঘটাতে পারে।
যদিও সেবাম নিঃসরণ সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না, তবে মাথার ত্বক পরিষ্কার রাখা জরুরি। বাজারে বিভিন্ন ধরনের পণ্য পাওয়া যায় যা তৈলাক্ত মাথার ত্বকের সমাধান দেওয়ার দাবি করে। কিন্তু শ্যাম্পু নাকি তেল—কোনটি আসলে বেশি কার্যকর?
শ্যাম্পু কী ভাবে কাজ করে?
শ্যাম্পু মূলত মাথার ত্বকের ময়লা, অতিরিক্ত তেল ও জমে থাকা নোংরা দূর করার জন্য তৈরি। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ক্ল্যারিফায়িং বা ব্যালান্সিং শ্যাম্পু, যাতে হালকা সার্ফ্যাক্ট্যান্ট থাকে, তা অতিরিক্ত তেল কমাতে সাহায্য করে। তবে স্বাভাবিক আর্দ্রতা নষ্ট করে না। খুব ঘন ঘন শ্যাম্পু করলে মাথার ত্বক আরও বেশি তেল তৈরি করতে শুরু করতে পারে।
তেল কী ভাবে কাজ করে?
চুলের গোড়াকে পুষ্ট করা, রক্তসঞ্চালন বৃদ্ধি ও শুষ্কতা রোধে তেল অত্যন্ত উপকারী। তবে তৈলাক্ত মাথার ত্বকে সরাসরি তেল লাগালে লোমকূপ বন্ধ হয়ে সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারে। তাই তেল সাধারণত শুষ্ক বা খুশকিপূর্ণ ত্বকের জন্য উপযোগী। পরিষ্কার মাথার ত্বকে হালকা তেল যেমন জোজোবা, আর্গান বা গ্রেপসিড অয়েল ব্যবহার করা যেতে পারে।
চুল ধোয়ার সময় মানুন এই নিয়ম –
অতিরিক্ত শক্তিশালী শ্যাম্পু দিয়ে বারবার চুল ধোয়া মাথার ত্বককে শুষ্ক করে দেয়। ফলে আরও বেশি তেল উৎপন্ন হয়। আবার অনেক দিন না ধুলে তেল জমে সমস্যা বাড়ে। তাই সপ্তাহে ২–৩ বার হালকা শ্যাম্পু ব্যবহার করাই ভাল।
কোন শ্যাম্পু বেছে নেবেন?
হালকা, সালফেট-ফ্রি শ্যাম্পু ব্যবহার করা উচিত, যাতে টি ট্রি অয়েল, স্যালিসিলিক অ্যাসিড বা ক্লে জাতীয় উপাদান থাকে। অতিরিক্ত ক্রিমি বা ময়েশ্চারাইজিং শ্যাম্পু এড়িয়ে চলুন। এতে তৈলাক্ত ত্বকের সমস্যা বাড়তে পারে।
চুলের আগাগোড়া তেল লাগালে শুষ্কতা ও ফ্রিজি সমস্যা কমে। তবে তৈলাক্ত মাথার ত্বকে সরাসরি তেল লাগানো উচিত নয়। তাই মাথার ত্বকের জন্য শ্যাম্পু, আর চুলের দৈর্ঘ্যের জন্য তেল ব্যবহার ভাল।
কী উপকারি, তেল নাকি শ্যাম্পু?
তৈলাক্ত ত্বকের জন্য শ্যাম্পুই আসল সমাধান, বিশেষ করে যেগুলো হালকা ও নমনীয়ভাবে পরিষ্কার করে। তেল চুলকে পুষ্টি দিলেও বেশি ব্যবহার করলে ত্বকের চিটচিটে ভাব বাড়াতে পারে। তাই সঠিক শ্যাম্পু বেছে নেওয়া, সীমিত পরিমাণে তেল ব্যবহার করা এবং নিয়মিত পরিচর্যা বজায় রাখা প্রয়োজন।