বাড়িতে একা, আচমকাই বুক ধড়ফড়, চোখে অন্ধকার দেখলেন, হার্ট অ্যাটাকের ধাক্কা সামলাবেন কী ভাবে?
হার্ট অ্যাটাকের ধাক্কা সামলাবেন কী ভাবে?
হার্ট অ্যাটাক। কথাটা শুনলেই মনে জন্ম নেয় আতঙ্ক। ধরুন, বাড়িতে আপনি একা। আচমকাই বুক ধড়ফড় করতে শুরু করল, চোখে অন্ধকার দেখলেন, সঙ্গে নিদারুণ শ্বাসকষ্ট, হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ দেখা দিলে কী ভাবে সামলাবেন?
হার্ট অ্যাটাক বুঝলে উদ্বেগ বহু গুণ বেড়ে যাবে। সে সময়ে কী করা উচিত, তা মাথায় আসবে না চট করে। অথচ এই সময়েই মাথা ঠান্ডা রাখা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। ঠান্ডা মাথায় পরিস্থিতি সামলাতে পারলেই বিপদ এড়ানো যাবে। একা থাকার সময়ে যদি হার্ট অ্যাটাক হয়, তখন ঠিক কী কী করা উচিত সে বিষয়ে জেনে রাখা খুব জরুরি।
বসে পড়ুন বা শুয়ে পড়ুন
বুকে চাপ চাপ ব্যথা শুরু হলে বা হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ বুঝলে আগে বসে পড়ুন বা শুয়ে পড়ুন। এই ব্যাপারে চিকিৎসক সুশান মুখোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, দাঁড়িয়ে থাকলে অঘটন ঘটতে পারে। বসে ডিপ ব্রিদিং শুরু করতে পারলে ভাল। নাক দিয়ে গভীর ভাবে শ্বাস টেনে ৪-৫ সেকেন্ড ধরে থেকে মুখ দিয়ে শ্বাস ছাড়তে হবে। এই পদ্ধতি টানা করে করে গেলে লাভ হতে পারে। 'ভেগাস নার্ভ'-কে সক্রিয় করে তুলতে হবে।
কী ওষুধ খাবেন?
নিশ্বাসের কষ্ট, বুকে পাথর চাপিয়ে দেওয়ার মতো ব্যথা, সেই সঙ্গে দরদর করে ঘাম এবং হাত, কাঁধ ও চোয়ালে ব্যথা ছড়িয়ে পড়লে সময় নষ্ট না করে সরবিট্রেট জাতীয় ওষুধ জিভের নীচে রাখুন। তা না থাকলে, চারটি অ্যাসপিরিন চিবিয়ে খেতে পারেন। মোট ৩০০ মিলিগ্রামের অ্যাসপিরিন খেতে হবে। এই ওষুধ রক্ত পাতলা করে এবং রক্ত জমাট বাঁধতে বাধা দেয়, যা হার্ট অ্যাটাকের তীব্রতা কমাতে সাহায্য করতে পারে। যদি হার্টের গোলমাল আগে থেকেই থাকে, তা হলে এমন ওষুধ হাতের কাছে রাখতে হবে। তবে ডোজ় অবশ্যই চিকিৎসককে জিজ্ঞাসা করে নিতে হবে।
ঢিলাঢালা পোশাক পরুন
শরীরে অস্বস্তি শুরু হলে ঢিলাঢালা পোশাক পরুন। গলা বন্ধ বা আঁটসাঁট পোশাক পরে থাকলে, তা তৎক্ষণাৎ বদলে ফেলুন। এমন পোশাক পরুন, যাতে শ্বাস নিতে সমস্যা না হয়।
খাবার বা জল খাবেন না
ওই সময়ে কোনও খাবার বা জল খেতে যাবেন না। এতে খাবার বা জল শ্বাসনালিতে আটকে গিয়ে বিপদ ঘটতে পারে। অ্যাসপিরিন খাওয়ার সময়ে খুব সামান্য জল দিয়ে ওষুধ খেতে হবে বা ওষুধ চিবিয়ে খেতে পারেন।
নিজেকে সিপিআর দেওয়া কি যায়?
অনেকে বলেন, বুকে ব্যথা ও শ্বাসের কষ্ট শুরু হলে জোর করে কেশে কফ বার করার চেষ্টা করলে অনেক বড় বিপদ থেকে বাঁচা যায়। একে বলে ‘কাফ সিপিআর’। কিন্তু চিকিৎসাবিজ্ঞান এই ব্যাপারে এখনও বিশ বাঁও জলে। দেখা গিয়েছে, কয়েকটি ক্ষেত্রে কিছুটা উপকার পাওয়া গেলেও যদি পদ্ধতি ভুল হয়, তা হলে উল্টো ফল হতে পারে। চিকিৎসক জানালেন, কাফ সিপিআর করতে গেলে তার পদ্ধতি আছে। ওই সময়ে বেশি জোরে কাশলে হিতে বিপরীত হতে পারে। তার চেয়ে ডিপ ব্রিদিং করা ভাল অথবা ফোন করে সাহায্য চান। কাছাকাছি হাসপাতালের নম্বর থাকলে ফোন করুন।