পাহাড়ি জেলায় কাজ শুরু হয়েছে 'ভূসংকেত' অ্যাপ
কলকাতার সল্টলেকে এক বিশেষ কর্মশালার আয়োজন করল ভারতের ভূতাত্ত্বিক সমীক্ষা অধিদফতর (GSI)। কেন্দ্রীয় সরকারের খনিজ মন্ত্রকের অধীনস্থ এই সংস্থার ন্যাশনাল ল্যান্ডস্লাইড ফরকাস্টিং সেন্টার (NLFC)-এর এক বছর পূর্ণ হল। সেই উপলক্ষে ধস পূর্বাভাসে এখনও পর্যন্ত কী অগ্রগতি হয়েছে, আর সামনে কী কী পরিকল্পনা রয়েছে, তা নিয়েই ছিল এই আলোচনা সভা। একটি অ্যাপের কথাও সামনে আনা হয়েছে। যার নাম 'ভূসংকেত'। এতে সহজেই জানা যাবে কোথায় কখন ঝস নামবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন GSI-এর মহা-পরিচালক অসিত সাহা, পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা দফতরের বিশেষ সচিব প্রিয়াঙ্কা সিংলা, আবহাওয়া দফতর, NDMA ও ISRO-র আধিকারিক ও বিশেষজ্ঞরা। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরাও অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
কোথায় কোথায় চলছে ধস পূর্বাভাসের কাজ?
GSI-র ডিরেক্টর অসিত সাহা বলেন, এক বছরে ৬ রাজ্যের ১৬টি জেলা থেকে বেড়ে এখন ৮ রাজ্যের ২১টি জেলায় ধস পূর্বাভাস দেওয়া হচ্ছে। রিয়েল-টাইম আপডেট দেওয়ার জন্য তৈরি হয়েছে বিশেষ ড্যাশবোর্ড ও মোবাইল অ্যাপ। খুব শীঘ্রই উত্তরাখণ্ডের রুদ্রপ্রয়াগ জেলায়ও এই পরিষেবা চালু হবে। তিনি আরও জানান, ভবিষ্যতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে ধসের আরও নিখুঁত পূর্বাভাস দেওয়ার প্রযুক্তি তৈরি হচ্ছে। GSI-র লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে একটি বড় আকারের আঞ্চলিক ধস পূর্বাভাস ব্যবস্থা চালু করা।
পাহাড়ি জেলায় কাজ শুরু হয়েছে
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিশেষ সচিব প্রিয়াঙ্কা সিংলা বলেন, ধসপ্রবণ এলাকায় এমন বৈজ্ঞানিক পূর্বাভাস অত্যন্ত জরুরি। কালিম্পং ও দার্জিলিংয়ে GSI-র নেতৃত্বে যে কাজ শুরু হয়েছে, তা রাজ্যের অন্য বিপদপ্রবণ জেলাতেও চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।
আরও কী কী নিয়ে আলোচনা হল?
এই কর্মশালায় ধস সংক্রান্ত সেন্সর প্রযুক্তি, রিমোট সেন্সিং, ওয়ার্নিং সিস্টেম এবং ভবিষ্যৎ প্রস্তুতির রূপরেখা তুলে ধরেন IMD, NRSC, GSI ও বেসরকারি প্রযুক্তি সংস্থার বিশেষজ্ঞরা।
GSI কীভাবে কাজ করে?
১৮৫১ সালে প্রতিষ্ঠিত GSI মূলত ভূতাত্ত্বিক গঠন, খনিজ অনুসন্ধান ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ বিশ্লেষণের কাজ করে। বর্তমানে এই দফতরের সদর দপ্তর কলকাতায়, এছাড়া জয়পুর, হায়দরাবাদ, নাগপুর, লখনউ, শিলং-সহ আরও ছয়টি আঞ্চলিক অফিস রয়েছে। GSI-এর প্রধান লক্ষ্য হল—দেশের ভূতাত্ত্বিক তথ্য সংগ্রহ, বিশ্লেষণ ও তা সরকারের নীতি নির্ধারণে সাহায্য করা।