৬০০০ গ্রাম হিন্দু শূন্য হয়ে গেছে বাংলায়
‘কার্বলিক অ্যাসিড দিলে সাপ যেভাবে পালায়, SIR ও তাই। যেই না গর্তে নির্বাচন কমিশন ঢেলেছে, অমনি ভারত ছেড়ে পালাচ্ছেন রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি মুসলমানরা…’আগরপাড়ার সভা থেকে ঠিক এই ভাবেই একের পর এক ‘বোমা’ ছুড়েছেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক তথা বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আদ্যোপান্ত আজ চাঁচাছোলা ভাষায় সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর দলকে বেলাগাম আক্রমণ করেছেন তিনি। গুরুতর অভিযোগ করে শুভেন্দু বলেছেন, এই বাংলাদেশি মুসলমান ও রোহিঙ্গাদের ঢোকানোর জন্যই রাজ্য সরকার সীমান্তে জমি দিচ্ছে না। ফলে কেন্দ্র বেড়া দিতে পারছে না। আর সেই কারণে ভোটের সময় এইসব লোকজন বুথে-বুথে গিয়ে ছাপ্পা মারতে সক্ষম হচ্ছে।
বরাবরই বাংলাদেশি মুসলমানদের বিপক্ষে কথা বলতে শোনা যায় শুভেন্দুকে। এর আগে বহু জায়গায় তিনি অভিযোগ করেছেন, এদের জন্যই বিভিন্ন জায়গা থেকে হিন্দুরা চলে যেতে বাধ্য় হচ্ছেন। আজ তো একেবারে রাখঢাক না করেই বিরোধী দলনেতা বলেছেন, স্বাধীনতার আগে যে গ্রামে একসময় সন্ধে হলে তুলসী মঞ্চে আলো জ্বলত, গীতা পাঠ হত সেই সব গ্রামে আজ তাঁদের কোনও অস্তিত্বই নেই। তিনি বলেন, “স্বাধীনতার আগে-পড়ে এমন অনেক গ্রাম আছে যেখানে গীতা পাঠ হত,হনুমান চল্লিশা পাঠ হত, এমন ৬০০০ হাজার গ্রাম এই পনেরো বছরে হিন্দু শূন্য হয়ে গেছে পশ্চিমবাংলায়। এখন সেখানে শাঁখ বাজে না, মন্দিরের অস্তিত্ব নেই, ঘণ্টা বাজে না।”
বিরোধী দলনেতার দাবি, এই সব বাংলাদেশি মুসলমানরা শুধু এখানেই থাকছেন তা নয়, রেশন নিয়ে নিচ্ছেন। ভারতের সরকার যে যে প্রকল্প সাধারণের জন্য আনছে, তাতেও এরা ভাগ বসিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, “তৃণমূলের সঙ্গে এখন বাংলাদেশি মুসলিম রোহিঙ্গা জামাতরা রাস্তায়। ভোট জিহাদ করছে। এরা এক একটা ভোটকে দুর্গ বানিয়েছে। শয়ে শয়ে অবৈধ ভোটার। ওই সকল বুথ গুলিতে পুরুষরা সকালে গামছা পরে ভোট দেয়, দুপুরে প্যান্ট পরে, আর বিকেলে লুঙ্গি পরে ভোট দেয়। আর মহিলারা সকালে কামিজ পরে, দুপুরে শাড়ি পরে আর বিকেলে ক্যামেরা বন্ধ করে বোরখা পরে মুখে ঢেকে ভোট দেয়।”
আজ যে সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়রা কেন্দ্রের বিরুদ্ধে পথে নেমে গলার সুর চড়িয়েছিলেন, ঠিক সেই একই সময় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী রাজ্যের সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগছেন। শাসকদল যখন ধর্মীয় রাজনীতি, বাঙালি অস্মিতা নিয়ে সরব, তখন শুভেন্দু আবার তৃণমূলের মুসলমান প্রীতি নিয়ে বারেবারে মুখ খুলেছেন। বলেছেন, “তৃণমূল হল মুসলিম লিগ ২। এটি পরিবার পার্টি। মহম্মদ আলি জিন্নাদের অসম্পূর্ণ স্বপ্ন পূরণ করছেন।”
সামনেই নির্বাচন। তার আগে রাজ্যে শুরু হয়েছে SIR। এই এক এসআইআরকে ইস্যু করে তৃণমূল যখন বাংলার কুর্সি আবার দখল করতে মরিয়া, পাল্টা বিজেপি তখন পিছু না হটে এই ইস্যুকেই শাসকদলেরই দিকে ঘোরাতে যে তৎপর হচ্ছে তা আজ শুভেন্দুর বক্তব্য থেকে আরও একবার স্পষ্ট হয়ে গেল।