কার্ডবোর্ড, গামছা দিয়ে তৈরি ১০ ফুটের প্রতিমা!
চন্দননগর ও চুঁচুড়ায় জগদ্ধাত্রী পুজো (Jagaddhatri Puja 2025) মানেই আলো, ভিড় আর শিল্পকলার উৎসব। বড় বড় প্যান্ডেল, জাঁকজমক আলোকসজ্জা, নানান শিল্পকলার ভিড়ে এবার সবার নজর কেড়েছে চুঁচুড়ার এক স্কুলছাত্র। পুরসভা এলাকার ভাগীরথী লেনের বাসিন্দা সৌমজিৎ মণ্ডল নিজের হাতে গড়ে তুলেছে এক অভিনব জগদ্ধাত্রী প্রতিমা (Chinsurah Jagaddhatri Puja) যা মাটি নয়, গামছা, কার্ডবোর্ড, থার্মোকল আর আর্ট পেপার দিয়ে তৈরি!
স্কুলপড়ুয়া সৌমজিৎ এখন অনেকটাই ছোট, কিন্তু তার কল্পনাশক্তি আর নিষ্ঠা তাক লাগিয়ে দিয়েছে সবাইকে। ছোট থেকেই মূর্তি দেখা ও তৈরি করার প্রতি তার ভীষণ আগ্রহ। তিন বছর আগে প্রথম কাগজ দিয়ে জগদ্ধাত্রী ঠাকুর তৈরি করেছিল সে। সেই থেকেই নিজের হাতে পুজোর প্রতিমা গড়ার রীতি চালিয়ে যাচ্ছে। এবছর তার তৈরি মূর্তির উচ্চতা প্রায় ১০ ফুট, থিম ‘বাংলার শিল্পকলা মা জগদ্ধাত্রী’।
প্রতিমা তৈরি করতে সৌমজিৎ ব্যবহার করেছে গামছা, কার্ডবোর্ড, থার্মোকল ও রঙতুলি ও বিভিন্ন রঙ। দেবীর সাজে আছে শাড়ি আর বেনারসি ওড়না, পিছনের চালচিত্রে ফুটে উঠেছে বাংলার ঐতিহ্যবাহী পটচিত্রের ছোঁয়া। প্রায় দু'সপ্তাহ ধরে রাত জেগে নিজের হাতে প্রতিমা বানিয়েছে সে। তবে পড়াশোনায় কোনও ফাঁকি দেয়নি, জানিয়েছেন তার বাবা সুভাষচন্দ্র মণ্ডল। তিনি বলেন, 'ছেলের হাত ধরেই আমাদের বাড়িতে জগদ্ধাত্রী পুজো শুরু হয়েছে। সে নিজেই ঠাকুর গড়ে, নিজেই পুজোর আয়োজন করে।”
সৌমজিৎ এক সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে। ছোট থেকেই আঁকতে ও নিজের হাতে কিছু বানাতে ভালোবাসে। আগে সে কাগজ দিয়ে দুর্গা, লক্ষ্মী আর সরস্বতীর মূর্তি বানিয়েছে। এবার জগদ্ধাত্রী ঠাকুরের মূর্তি তৈরি করে আরও নতুন কিছু করার চেষ্টা করেছে সে।
পুজোর সময় সৌমজিতের বাড়িতে এখন ভিড় লেগেই আছে। আত্মীয়, প্রতিবেশী, বন্ধুরা সবাই আসে ঠাকুর দেখতে। নিয়ম মেনে পুজো চলছে, সবাই প্রশংসা করছে তার প্রতিমা। ছোট্ট এই শিল্পীর হাতে তৈরি কাগজের ঠাকুর যেন এক সাধারণ বাড়িকে বদলে দিয়েছে পুজো মণ্ডপে।