গীতা পাঠের পর এবার মুসলিমদের বিশ্ব ইজতেমা বাংলায়,
কদিন আগে ৫ লক্ষ্যে কণ্ঠে গীতা পাঠ হয়েছে ব্রিগেডে। তার পর এবার বিশাল কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছে মুসলিমদের ইজতামার আয়োজন নিয়ে। হুগলির দাদপুর এলাকার পুইনান–পাণ্ডুয়ায় ছাব্বিশের শুরুতেই বসতে চলেছে মুসলিমদের বিশ্ব ইজতেমা (World Ijtema in Hooghly)। ২ থেকে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে এই ধর্মীয় সমাবেশ। আয়োজকদের অনুমান, দেশ-বিদেশ মিলিয়ে ১৮ থেকে ২০ লক্ষ মুসলিমের সমাগম হতে পারে সেখানে। সোমবার এ ব্যাপারে নবান্নে বড় বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সম্প্রতি ওয়াকফ সম্পত্তির ব্যাপারে বাংলায় সংখ্যালঘুদের মধ্যে যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে, সেই প্রেক্ষাপটে এই বৈঠক তাৎপর্যপূর্ণ বলে অনেকের মত।
ইজতেমা কী? (Ijtema)
ইজতেমা হল একটি বৃহৎ ইসলামিক ধর্মীয় সমাবেশ। বিভিন্ন ইসলামি সংগঠনের উদ্যোগে এ ধরনের সমাবেশে লক্ষ লক্ষ ধর্মপ্রাণ মুসলমান অংশগ্রহণ করেন। বিশ্বজুড়ে তাবলিগি জামাতের কার্যক্রমে ইজতেমা এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। এই সমাবেশ মুসলমানদের ধর্মীয় জীবনে গভীর প্রভাব ফেলে এবং বিপুল সংখ্যক মানুষ এতে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন।
বিশ্বের বহু দেশেই প্রায় একই রীতিতে ইজতেমা পালিত হয়। গবেষক বুলবুল সিদ্দিকির মতে, ইজতেমায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে ধর্মীয় কর্তৃত্ব, সামাজিক মর্যাদা ও আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পায়। পাশাপাশি ভ্রাতৃত্ববোধ ও ‘উম্মাহ’-র ধারণার মধ্য দিয়ে মুসলিম পরিচয়কে আরও সুদৃঢ় করতে ইজতেমা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
হুগলির ওই সমাগমের ব্যাপারে সোমবার নবান্নর সভাঘরে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ( Mamata Banerjee)। বৈঠকে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী ববি হাকিম, জাভেদ খান, সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী, অরূপ বিশ্বাস-সহ একাধিক ইমাম ও প্রশাসনিক কর্তারা।
নবান্ন সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন, অনুষ্ঠান যেন সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু ও নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়। খাওয়া-দাওয়া, পানীয় জল, স্বাস্থ্য পরিষেবা থেকে শুরু করে নিরাপত্তা, সব দিকেই সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে হুগলি জেলা প্রশাসনকে। পর্যাপ্ত স্বেচ্ছাসেবক ও প্রশাসনিক নজরদারি রাখার কথাও বলা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকে বলেন, “এত বড় অনুষ্ঠানে কোনওরকম অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে। যাঁরা আসবেন, তাঁদের সব ধরনের সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।” একই সঙ্গে তিনি প্রশাসনকে সতর্ক করে দেন, কোনও সমস্যার আশঙ্কা থাকলে আগাম ব্যবস্থা নিতে হবে।
বছর ঘুরলেই বিধানসভা ভোট—সে কথা মাথায় রেখেই বৈঠকে শান্তি বজায় রাখার উপর বিশেষ জোর দেন মুখ্যমন্ত্রী, এমনটাই সূত্রের খবর। নবান্নের নির্দেশ, ধর্মীয় সমাবেশকে ঘিরে যেন কোনওভাবেই অশান্তির ছায়া না পড়ে।