নামী আবাসনে কুকুরের উপর অত্যাচার!
পোষ্য আর পথকুকুরদের জন্য তাঁর লড়াই বহুদিনের। প্রাণপ্রেমই যাঁর ধ্যানজ্ঞান—সেই দেবশ্রী রায়কে এবার অপমানের মুখে পড়তে হল দক্ষিণ কলকাতার এক বহুতলে। কারণ? এক পোষ্য কুকুরকে ঘোরানো নিয়ে আবাসনের একাংশের আপত্তি। আর সেই অন্যায় থামাতে গিয়েই অভিনেত্রীকে শুনতে হল, “ইউ আর জাস্ট অ্যান অ্যাকট্রেস!”
ঘটনাটি দক্ষিণ কলকাতার এক বিলাসবহুল আবাসনের। জানা গিয়েছে, পোষ্যকে বাইরে হাঁটাতে নিয়ে যাওয়ায় বাসিন্দা অদ্রিজা ও তাঁর স্বামীর সঙ্গে বচসায় জড়ান কয়েকজন প্রতিবেশী। অদ্রিজা দেবশ্রী রায়ের ‘দেবশ্রী রায় ফাউন্ডেশন’-এর সক্রিয় সদস্য। খবর পেয়ে রবিবার বিকেলে দেবশ্রী নিজে হাজির হন সেখানে—আর তাতেই চরমে ওঠে বিতর্ক।
অভিনেত্রীর অভিযোগ, “আমাকে ঘিরে রীতিমতো আক্রমণ শুরু হয়। কেউ বলছে, কে আপনি, আমাদের সোসাইটিতে এসেছেন কেন! কেউ বলছে, আপনি তো অভিনেত্রী, এখানে আসার কী দরকার?” দেবশ্রীর কথায়, “আমার কোনো ইনভিটেশনের দরকার হয় না। যদি শুনি, কোথাও প্রাণীর উপর অত্যাচার হচ্ছে, আমি ছুটে যাই। এটাই আমার কাজ, আমার কর্তব্য।”
তিনি আরও জানান, শান্তশিষ্ট একটি রিট্রিভার কুকুরকে নিয়ে ওই পরিবারের উপর বারবার চাপ তৈরি করা হচ্ছিল। “ওরা কুকুরের মল ত্যাগের পর সব ধুয়ে দেয়। তবুও ওদের হেনস্থা করা হচ্ছে, মারতে আসছে। এই অবস্থায় ওদের পাশে দাঁড়ানোই তো আমার দায়িত্ব,” বলেন দেবশ্রী।
দেবশ্রীর দাবি, সেই আবাসনের বাসিন্দারা তাঁকে বারবার বলেছেন, অদৃজা বলে মেয়েটি নাকি তাঁর কুকুরটিকে মন্দিরের সামনে ঘোরান। যেখানে তাঁরা কালীপুজো করেন। কিন্তু এতে অপরাধ কী? প্রশ্ন অভিনেত্রীর। তাঁর কথায়, “আমি মানি কুকুর তো মহাকালের দূত। আমাদের দেবদেবীদের সবার বাহন পশু। শিবের প্রিয় প্রাণী কুকুর। সেখানে শিবমন্দিরের সামনে কুকুর হাঁটালে পাপ হয়? ঠাকুর কি শুধু মানুষের, পশু-পাখির নয়?”
ঘটনার পর থেকেই দেবশ্রী রায়ের পাশে দাঁড়িয়েছেন বহু পশুপ্রেমী। তাঁদের বক্তব্য—যে দেশে গরু, সাপ, বানর, ইঁদুরও দেবতা হিসেবে পূজিত, সেখানে কুকুরকে ঘৃণা করা মানে মানবিকতারই অবমাননা। কুকুর সহ অন্যান্য পশুকে ঘিরে বর্বরতার উদাহরণ কম নয়। কিছু দিন আগেই দিল্লিতে এক ঘোষণাকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়েছিল গোটা দেশ, যদিও মানসিকতার পরিবর্তন আসেনি আজও। প্রমাণ এই ঘটনা।