মমতাকে চিঠি দিয়ে ক্রীড়ামন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা অরূপের
বাংলায় শাসক দল তথা তৃণমূল কংগ্রেসের রাজনীতিতে একটা প্রবাদ রয়েছে। স্বেচ্ছায় এই দলে কেউ কিছু ত্যাগ করেন না। সবাই পদ আঁকড়ে ধরতে চান। কিন্তু মঙ্গলবার অনেক দিন পর এই প্রথম দেখা গেল, কোনও মন্ত্রী ব্যর্থতার দায় মাথায় নিয়ে ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন। গত শনিবার যুবভারতী স্টেডিয়ামে লিওনেল মেসির (Messi in Kolkata) ইভেন্টকে কেন্দ্র করে যে নৈরাজ্যের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, এদিন তার দায় নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) চিঠি দিয়েছেন ক্রীড়া মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস (Arup Biswas resigns)। চিঠিতে অরূপ বলেছেন, “নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে আমি ক্রীড়ামন্ত্রীর পদ থেকে অব্যহতি চাইছি”।
মুখ্যমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠিতে অরূপ লিখেছেন, ‘আশাকরি আপনি আমার অনুরোধ রাখবেন’। আবার অরূপের চিঠি সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করে কুণাল ঘোষ প্রথমে দাবি করেছিলেন, অরূপের অনুরোধ দিদি রেখেছেন এবং ইস্তফা গ্রহণও করে নিয়েছেন। যদিও পরে তিনি সেই পোস্ট এডিট করে লিখেছেন, "সূত্রের খবর সিদ্ধান্ত বিবেচনা করছেন মুখ্যমন্ত্রী।"
কেন এই ইস্তফা? (Why Arup Biswas resigned)
শনিবার যুবভারতীতে মেসির ইভেন্টে যে মহাবিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছিল, তার জন্য আয়োজকদেরই প্রাথমিক ভাবে দায়ী করেছিল সরকার। কিন্তু পরে সরকার ও শাসক দলের নেতারা স্পষ্ট বুঝতে পারেন, ইভেন্টের অন্যতম উদ্যোক্তা শতদ্রু দত্তর তুলনায় সাধারণ মানুষের উষ্মা ও অসন্তোষ অনেক বেশি ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের উপর। তিনি সেদিন মেসির সঙ্গে লেপ্টে ছিলেন। শুধু নিজে নন, মাঠে থাকা আমলা, সচিব, সেলিব্রিটিদের ধরে ধরে মেসির সঙ্গে ছবি তুলিয়েছেন তিনি। যার জন্য দলের মধ্যেই অনেকে তাঁকে ‘ছবি বিশ্বাস’ বলে কটাক্ষ করছেন। বস্তুত শনিবার দুপুর থেকে এই ইস্তক সোশাল মিডিয়ায় যাবতীয় সমালোচনার কেন্দ্রে রয়েছেন অরূপ।
তৃণমূলের একাধিক শীর্ষ নেতার কথায়, মানুষের ক্ষোভ ও হতাশা আরও বেড়ে গেছে মেসির হায়দরাবাদ ও মুম্বইয়ের ইভেন্ট দেখে। মানুষ শুধু মেসিকে চোখ ভরে দেখেননি, রীতিমতো উপভোগ করেছেন। আর সেই দৃশ্যের সঙ্গে বার বার তুলনা চলে এসেছে যুবভারতীর। জাতীয় স্তরে তো বটেই আন্তর্জাতিক স্তরেও যুবভারতীয় ঘটনায় মুখ পুড়েছে কলকাতা তথা বাংলার।
দলের কালীঘাট ঘনিষ্ঠ এক নেতার কথায়, যুবভারতীতে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজক তৃণমূল বা সরকার ছিল না। কিন্তু অরূপের কারণেই গোটা দায় এসে পড়ে সরকারের ঘাড়ে। তাই দেরিতে হলেও অরূপকে ইস্তফা দিতে বলা হয়। যাতে মানুষের উষ্মা ও অসন্তোষ কিছুটা হলেও প্রশমিত করা যায়।