পশ্চিমবঙ্গে ১০০ দিনের কাজ
১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকা নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের টানাপোড়েন বহু পুরনো। সেই ইস্যুতে এবার ফের আগুনে ঘি পড়ল। রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েনের প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্র যে রাজ্যভিত্তিক তালিকা দিয়েছে, তাতে পশ্চিমবঙ্গের নামই নেই। কেন্দ্র বলেছে, বর্তমানে কোনও রাজ্যের কোনও বকেয়া নেই। কিন্তু তালিকায় বাংলার নাম না থাকাকে কেন্দ্র করে নতুন করে বিতর্কে ছড়িয়েছে।
৩৩টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের নাম রয়েছে ওই তালিকায়, কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ অনুপস্থিত! তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছেন, “বাংলা কি ভারতের মানচিত্রের বাইরে? এটা বাংলার মানুষের চরম অপমান। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই বাদ দেওয়া হয়েছে।”
কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের দেওয়া তথ্যে বলা হয়েছে, ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে ২১ জুলাই পর্যন্ত মনরেগায় রাজ্যগুলিকে মোট ৪৪,৪৭৯.৭৯ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে এবং কোনও বকেয়া নেই। তবে এই ‘তথ্যনির্ভর’ রিপোর্টে পশ্চিমবঙ্গের নামই নেই। অথচ কেন্দ্রীয় তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরে ১৫.৯৯ কোটি পরিবার মনরেগায় নাম নথিভুক্ত করেছেন, কাজ করেছেন ৭.৮৮ কোটি মানুষ।
তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, কেন্দ্র ২০২১ সালের ডিসেম্বর থেকে বাংলার প্রায় ৭০০ কোটি টাকা আটকে রেখেছে। কেন্দ্রের বঞ্চনা প্রসঙ্গে সম্প্রতি বিজেপিকে নিশানা করে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, “এটা কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিহিংসার রাজনীতি। বাংলা থেকে পরাজিত হয়ে প্রতিশোধ নিচ্ছে বিজেপি। বারে বারে বাংলাকে অপমান করা হচ্ছে, ভোট বাক্সে জবাব পাবে মোদী সরকার।”
অন্যদিকে, কলকাতা হাইকোর্ট স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছে, আগামী ১ অগস্ট থেকে রাজ্যে ১০০ দিনের কাজ ফের চালু করতে হবে। আদালতের পর্যবেক্ষণ, কেন্দ্র নজরদারি চালাতে পারে, শর্ত দিতে পারে, কিন্তু কাজ বন্ধ রাখা আইনসঙ্গত নয়।
রাজনৈতিক মহলের মতে, কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাতের নতুন পর্বে মোদী সরকারের এই অবস্থান বাংলার মানুষের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে। তৃণমূল বলছে, এটা শুধু প্রশাসনিক অবহেলা নয়, একেবারে ‘রাজনৈতিক অবরোধ’।