বিধানসভায় আজ ভাষা-সংঘাত
এদিনের শুরু থেকেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। উঠে এল, ভারতীয় সেনার মেয়ো রোডে তৃণমূলের প্রতিবাদ মঞ্চ খোলার বিষয়টিও। আর সে কথা প্রসঙ্গে ব্রাত্য বসু তুললেন পাকিস্তান সেনার কথা! ‘৭১ সালে বাংলাদেশে পাক সেনাবাহিনীর অত্যাচারের সঙ্গে এই ঘটনার তুলনা করেন ব্রাত্য। তাতেই তপ্ত বিধানসভা, বিজেপির ওয়াকআউট, স্লোগান দিয়ে সাসপেন্ড রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা!
এদিন শুরুতেই বিজেপি নেতা অমিত মালব্যকে কটাক্ষ করেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘জনগণমনকে ব্রাহ্ম মন্ত্র বলে টুইট করছেন মালপোয়া নামের বিজেপির একজন। জানেই না এটা বাংলা ভাষা!’ জাতীয় সঙ্গীতের প্রেক্ষাপট বুঝিয়ে তিনি বলেন, “বাংলায় লেখা এই গানের প্রথম স্তবকটিকে জাতীয় সঙ্গীত হিসাবে গৃহীত হয় ১৯৫০ সালে ২৪ জানুয়ারি।” এই তথ্য উল্লেখ করে তার দ্বিতীয় স্তবক পাঠ করেন চন্দ্রিমা। অমিত মালব্যকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, “একটু জেনে টুইট করতে হবে। না হলে দেশ থেকে কুইট করতে হবে।”
চন্দ্রিমার পর বিজেপির বিধায়ক অসীম সরকার বলতে ওঠেন। তৃণমূলের বিভিন্ন বিধায়করা সবাই বলতে শুরু করেন, “এত কথার কিছু নেই। গান ধরুন, বলুন আমি বাংলার গান গাই।”
এরপরই বলতে ওঠেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। বাংলা ভাষা ও বাঙালিদের ওপর অপমান নিয়ে তিনি বক্তৃতা রাখছিলেন। তার একেবারে শেষ লগ্নে তিনি মেয়ো রোডে তৃণমূলের মঞ্চ খুলে দেওয়ার সঙ্গে ১৯৭১ সালের প্রসঙ্গ টেনে আনেন। তিনি বলেন, “গতকাল (সোমবার) সেনাবাহিনী যেভাবে বাংলা ভাষার মঞ্চকে ভেঙেছে, সেভাবে ২৫ মার্চ ১৯৭১ সালে পাকিস্তান আর্মি খুন করেছিল বাংলাদেশকে।” এরপরই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। স্লোগান দিতে শুরু করেন বিজেপি বিধায়করা। শুভেন্দু অধিকার চিৎকার করে বলতে থাকেন, “ইন্ডিয়ান আর্মি জিন্দাবাদ।” চেঁচামেচিতে বক্তৃতা থামিয়ে দেন ব্রাত্য। এরপরই দেখা যায় অরূপ বিশ্বাস স্পিকারকে গিয়ে কিছুটা একটা বলেন। তারপরই শুভেন্দু অধিকারীকে এদিনের জন্য সাসপেন্ড করেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তারই প্রতিবাদে ওয়াক আউট করে বিজেপি।
বাইরে বেরিয়ে এসে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “আজকে শুভেন্দু অধিকারীকে বহিষ্কার করল, কারণ ব্রাত্য বসু ভারতীয় সেনাকে অপমান করেছিলেন, শুভেন্দু তার প্রতিবাদ করেছিলেন বলে।”