সোনাগাছি গিয়ে যৌনকর্মীদের আশ্বাস সিইও-র
যৌনকর্মীদের (Sexworkers) কথা মাথায় রেখে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে (Manoj Agarwal) চিঠি লিখেছিল তিন সংগঠন। রাজ্যে এসআইআরের (SIR in West Bengal) কাজ শুরুর ১৭ দিনের মাথায় সেই মতো একটি স্পেশ্যাল ক্যাম্প (Special Camp) তৈরি করা হয়েছে এশিয়ার বৃহত্তম যৌনপল্লি সোনাগাছিতে। সেখানেই কাজের তদারকিতে মঙ্গলবার সকাল সকাল হাজির হলেন সিইও মনোজ আগরওয়াল (CEO)।
যৌনকর্মীদের বরাভয় দিয়ে মনোজ জানান, "কোনও ভয় নেই। ওঁদের বাবা-মা না থাকলে আমাদের স্পেশ্যাল পাওয়ার আছে। ওটা দিয়েই নাম তুলব। স্পেশ্যাল অবজার্ভারের ৫ জন আগামিকাল আসছেন। শুধু যৌনকর্মী নয়, অরফান (অনাথ) হাউসেও স্পেশ্যাল ক্যাম্প হব। ১১ তারিখের মধ্যে ফর্ম তুলে নেব। ১৬ তারিখ খসড়া হবে।"
এই ক্যাম্প করা হয়েছে যাতে সবাই এনুমারেশন ফর্ম (Enumeration Form) ফিল আপ করে জমা দিতে পারে এবং নথি সংক্রান্ত কোনও সমস্যার কথা জানাতে পারে। সেই প্রেক্ষিতে এই ক্যাম্প থেকেই তা সমাধান করার ব্যবস্থা করা হবে।
যৌনকর্মীদের সমস্যার কথা বলতে যে সংগঠনগুলি এগিয়ে এসেছিল তারা তিন দফা প্রস্তাব রাখে। প্রথমত, যৌনকর্মীদের ক্ষেত্রে ভোটার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য কমিশন যেন নির্দিষ্ট কিছু বিকল্প নথি বা পরিচয়পত্রকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণযোগ্য ঘোষণা করে। দ্বিতীয়ত, সোনাগাছি এলাকায় বিশেষ শিবিরের আয়োজন করে ভোটার তালিকা সংশোধন ও এনুমারেশন ফর্ম পূরণের প্রক্রিয়া সহজ করা হোক। তৃতীয়ত, যৌনকর্মী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের নামে বিদ্যমান ভোটার কার্ড যেন কোনও পরিস্থিতিতেই বাতিল না হয়, সে বিষয়ে কমিশন স্পষ্ট নির্দেশ দিক।
এরপরই কার্যত নড়েচড়ে বসে রাজ্যের সিইও দফতর (CEO Office)। বিশেষ ক্যাম্প করে ইআরও-কে সেখানে পাঠিয়ে যাবতীয় সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে তারা। ইআরও ক্যাম্পে বসে শুনবেন কাদের কী সমস্যা রয়েছে। সব কিছু বিচার-বিবেচনা করে যাতে তাঁদের ভোটার কার্ড হয়ে যায়, কমিশনের সঙ্গে কথা বলে তিনিই সেই সিদ্ধান্ত নেবেন।
এদিকে, সোমবার সাংবাদিক বৈঠক করে আবারও তিনটি সংগঠন— সোসাইটি ফর হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল অ্যাকশন (SHDSA), ঊষা মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড এবং আমরা পদাতিক জানায়, নতুন নিয়মের ফলে বহু যৌনকর্মী তাঁদের ভোটার পরিচয় হারানোর আশঙ্কায় রয়েছেন।
২০০৭ সালে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগে ঊষা কো-অপারেটিভের নথির ভিত্তিতে বহু যৌনকর্মীকে ভোটার কার্ড দেওয়া হয়েছিল, যা তাদের পরিচয় ও সম্মানের প্রতীক ছিল। এখন সেই প্রতিষ্ঠিত পরিচয় নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয় তৈরি হয়েছে। সংগঠনগুলির আরও আশঙ্কা, অনেক যৌনকর্মীর প্রাপ্তবয়স্ক সন্তানের বার্থ সার্টিফিকেট নেই, তাই তারাও ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়তে পারেন।