মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগের ব্যাখ্যা দিলেন সিইও মনোজ
এসআইআর-এর (SIR) দ্বিতীয় দফার কাজ খতিয়ে দেখতে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের দায়িত্ব দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (Election Commission)। সেই কর্মীদেরই এদিন দু’দফায় বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে নজরুল মঞ্চে। প্রশিক্ষণ শিবিরের ফাঁকেই রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (CEO) মনোজ আগরওয়াল জানিয়ে দিলেন, “বাইরের রাজ্য থেকে আমরা কোনও অবজার্ভার নিয়োগ করিনি (No Observers were appointed from other states)। মাইক্রো অবজার্ভাররা সকলেই এরাজ্যে কর্মরত। তবে কেউ অন্য রাজ্যের বাসিন্দা কি না—তা আমরা বলতে পারব না। সবারই নিয়োগপত্র দিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
তিনি আরও স্পষ্ট করেন, ইসিআইয়ের নির্দেশিকা অনুযায়ীই মাইক্রো অবজার্ভাররা কাজ করবেন।
সিইও-র এদিনের এই মন্তব্যকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে রাজনৈতিক মহলে। কারণ, তার ঠিক আগের দিনই নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে দলের কর্মীসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Chief Minister Mamata Banerjee) অভিযোগ করেছিলেন, রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা না করেই নাকি অবজার্ভার নিয়োগ করছে কমিশন। তাঁর প্রশ্ন, “কেন বাংলায় ভোট করাবে অন্য রাজ্যের লোক? বাংলার ভাষা জানে? হিয়ারিং করবে কী করে?”
মুখ্যমন্ত্রী এও দাবি করেন, কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে, অথচ তাঁদের বিভাগ, পদ, ঠিকানা—এই সমস্ত তথ্য রাজ্যকে জানানো হয়নি। আশঙ্কার সুরে এও বলেন, “মাইক্রো অবজার্ভার কারা? বিজেপির দালাল নয় তো?” এই আবহেই এদিন সিইও-র মন্তব্যকে কমিশনের তরফে এক ধরনের জবাব বলেই ব্যাখ্যা করছেন অনেকে।
নজরুল মঞ্চে প্রশিক্ষণে হাজির ছিলেন বিশেষ অবজার্ভার সুব্রত গুপ্তও। তিনি জানান, যাঁদের হিয়ারিংয়ের প্রয়োজন থাকবে তাঁদের কাছেই নোটিস যাবে, কারও ক্ষেত্রে প্রয়োজন না হলে নোটিস দেওয়া হবে না—এ নিয়ে কোনও বিভ্রান্তির সুযোগ নেই।
তবে নীচু তলার বাস্তব চিত্র কিছুটা ভিন্ন। অভিযোগ, কমিশনের নির্দেশ বারবার পাল্টানোর ফলে সমস্যায় পড়ছেন বহু বিএলও। কোথাও বলা হচ্ছে, ২০০২ সালের ভোটারদের হিয়ারিং নেই, আবার কোথাও মৌখিক নির্দেশ আসছে হিয়ারিং করতে হবে—এমনকি কিছু জায়গায় নোটিসও ইস্যু হয়ে গেছে। যদিও বিভ্রান্তির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন সুব্রতবাবু। তবে মনোজ আগরওয়াল যেভাবে মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ পরোক্ষে খারিজ করে দিয়েছেন তার জবাবে রাজ্য কী বলে তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে কৌতূহল তুঙ্গে।