SIR নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী চিঠি লিখলেন নির্বাচন কমিশনারকে
রাজ্যে ভোটের আগে (WB Polls 2026) এসআইআর (SIR) প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশাসনিক স্তরে যেমন চাপ বাড়ছে, তেমনই সাধারণ মানুষের মধ্যেও অস্বস্তি ঘনীভূত হচ্ছে। পরপর কয়েক সপ্তাহে বিভিন্ন জেলায় একাধিক মৃত্যুর খবর সামনে আসায় পরিস্থিতি আরও জটিল আকার নেয়। তৃণমূল কংগ্রেস (TMC) অভিযোগ তোলে - এসআইআর প্রক্রিয়ার চাপ ও আতঙ্কই এই মৃত্যুগুলির জন্য দায়ী। এবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) সরাসরি জাতীয় নির্বাচন কমিশনার (ECI) জ্ঞানেশ কুমারকে (Gyanesh Kumar) চিঠি দিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন।
চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, এসআইআর প্রক্রিয়া এমনভাবে চালানো হচ্ছে যে তা এখন প্রশাসনের (State Govt) কাছে এক গভীর শঙ্কার জায়গায় পৌঁছে গেছে। তাঁর অভিযোগ, সরকারি আধিকারিক থেকে শুরু করে সাধারণ নাগরিক—সবার ওপরই এই প্রক্রিয়া ‘অপরিকল্পিতভাবে চাপিয়ে দেওয়া’ হয়েছে। এর ফলে রাজ্য জুড়ে ভয় ও বিভ্রান্তি বাড়ছে বলেই তিনি মন্তব্য করেন।
মমতা স্পষ্ট জানান, সবচেয়ে বেশি চাপে রয়েছেন বুথ লেভেল অফিসাররাই (BLO)। তাঁর দাবি, ৪ ডিসেম্বরের মধ্যে ফর্ম বিষয়ক পুরো প্রক্রিয়া শেষ করা বাস্তবে সম্ভব নয়। এই তাড়াহুড়োয় বিএলও-রা চাপের মুখে ভুল ফর্ম (Wrong Form) আপলোড করতে বাধ্য হতে পারেন, যার পরিণতিতে প্রকৃত ভোটারদেরই বিপাকে পড়তে হবে।
মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ তোলেন, বিএলও-দের ওপর অমানুষিক কাজের চাপ দেওয়া হচ্ছে। সময়সীমা মেনে সব কাজ শেষ করতে গিয়ে যে কোনও ভুলের দায় তাঁদের ঘাড়েই চাপানো হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে রাজ্যের সিইও-র (CEO Office WB) ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন করেন মমতা। তাঁর মন্তব্য, নির্বাচন কমিশন মাঠের বাস্তব পরিস্থিতি দেখতে চাইছে না। সাহায্য করা তো দূরে, বরং শো-কজ নোটিশ (Show Cause) দিয়ে কর্মকর্তাদের আরও বিব্রত করা হচ্ছে।
চিঠিতে সাম্প্রতিক মৃত্যুগুলির প্রসঙ্গও তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর মতে, যে কাজ করতে সাধারণত তিন বছর সময় লাগে, সেটি মাত্র তিন মাসে শেষ করতে বলা হচ্ছে। এই অযৌক্তিক চাপের কারণেই পরপর প্রাণহানি ঘটছে বলে তিনি দাবি করেন।
এই পটভূমিতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্বাচন কমিশনের কাছে দ্রুত হস্তক্ষেপের আবেদন জানান। তাঁর অনুরোধ, পরিস্থিতি আরও অবনতির আগে চলমান এসআইআর প্রক্রিয়া অন্তত এখনই স্থগিত রাখা প্রয়োজন। তা স্থগিত করে বিএলওদের প্রশিক্ষণের দাবি করেছেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রীর সতর্কবার্তা, এখন সিদ্ধান্ত না নিলে পরবর্তী সময়ে তার গুরুতর প্রভাব পড়তে পারে।