মেসিকে দাঁড় করিয়ে অজয় দেবগন, টাইগার শ্রফকে সংবর্ধনা, ওয়াংখেড়েতে জনতার ‘রোষে’ দুই অভিনেতা |
'ভিআইপি কালচার চলবে না...,' জনসাধারণের স্বার্থে গঙ্গাসাগর নিয়ে বৈঠকে স্পষ্ট বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর
জনসাধারণের স্বার্থে গঙ্গাসাগর নিয়ে বৈঠকে স্পষ্ট বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর
ভিআইপিদের জন্য সাধারণ মানুষের অসুবিধা হবে, এমন কোনও কাজ করা যাবে না, সোমবার গঙ্গাসাগর মেলা ঘিরে প্রস্তুতি বৈঠকে স্পষ্ট ও কড়া বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। একইসঙ্গে রাজ্য পুলিশের ডিজিকে নিরাপত্তার দিকে বিশেষ নজর দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নবান্ন সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, মেলায় কোনওভাবেই ভিআইপি কালচার চলবে না। ভিআইপিদের জন্য সাধারণ পুণ্যার্থীদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। সূত্রে খবর, গঙ্গাসাগর সফরে বুড়িগঙ্গা ব্রিজের শিলান্যাস করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী।
ভিড় নিয়ন্ত্রণ এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও মজবুত করতে একাধিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জানা গেছে, ১২ জানুয়ারি থেকেই বিভিন্ন মন্ত্রী গঙ্গাসাগরে পৌঁছে যাবেন এবং সরেজমিনে পরিস্থিতি দেখবেন। বেচারাম মান্না, পুলক রায়,সুজিত বসু, ববি হাকিম, অরূপ বিশ্বাস, স্নেহাশীষ চক্রবর্তী, মানস ভুইয়াকে এই দায়িত্ব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁরা মেলা চলাকালীন গঙ্গাসাগরের বিভিন্ন জায়গায় থেকে দায়িত্ব সামলাবেন বলে জানা গেছে।
এক সূত্রের কথায়, এদিন এই গঙ্গাসাগর বৈঠক শুরু হওয়ার ঠিক আগেই মুখ্যমন্ত্রী যুবভারতী স্টেডিয়ামের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। জানা গিয়েছে, বিধাননগরের সিপি ও মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের উদ্দেশেই এই তাঁর এই ক্ষোভ। ম্যানেজমেন্ট ও পুলিশের ভূমিকা নিয়েও মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন।
এছাড়াও, মেলা নির্বিঘ্নে পরিচালনার জন্য সাড়ে তিন হাজার ভলান্টিয়ারকে প্রশিক্ষণ দিয়ে মোতায়েন করা হবে। পুণ্যার্থীদের সুবিধার জন্য তাঁদের হাতে রিস্ট ব্যান্ড এবং পরিচয়পত্র দেওয়া হবে, যাতে প্রয়োজনের সময় দ্রুত শনাক্ত করা যায়।
আগামী বছরের গঙ্গাসাগর মেলা (Gangasagar Fair) যাতে নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়, সে দিকেই এবার আগাম কড়া নজর রাজ্য সরকারের। সেই লক্ষ্যেই সোমবার নবান্নে উচ্চ পর্যায়ের প্রস্তুতি বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Chief Minister Mamata Banerjee)। নতুন বছরের ১০ থেকে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত সাগরদ্বীপে বসবে গঙ্গাসাগর মেলার আসর। এ বছর ১৪ জানুয়ারি গঙ্গাসাগরে পুণ্যস্নানের দিন।
পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তা, যাতায়াত, স্বাস্থ্য পরিষেবা থেকে শুরু করে সামগ্রিক ব্যবস্থাপনা—এদিনের প্রশাসনিক বৈঠকে সব দিক খতিয়ে দেখা হয় (Administrative meeting on Nabanna,)। জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে অনুষ্ঠিত এই ধর্মীয় মেলায় দেশ-বিদেশ থেকে লক্ষাধিক পুণ্যার্থী ভিড় জমান। ফলে রাজ্য সরকারের কাছে গঙ্গাসাগর মেলার আয়োজন বরাবরের মতোই এক বড় প্রশাসনিক চ্যালেঞ্জ।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরে উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে আয়োজিত কুম্ভমেলায় পদপিষ্ট হয়ে ৩০ জন পুণ্যার্থীর মৃত্যু হয়েছিল। সেই ঘটনায় দেশজুড়ে বিতর্ক ছড়ায়। কুম্ভমেলার আয়োজন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল বিজেপিবিরোধী দলগুলি। সেই সময়েই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কটাক্ষ করে মহাকুম্ভকে ‘মৃত্যুকুম্ভ’ বলে আখ্যা দিয়েছিলেন। এবার সুষ্ঠু ও নিরাপদ ভাবে এক বিশাল ধর্মীয় মেলা আয়োজনের দায়িত্ব তাঁর নেতৃত্বাধীন সরকারের কাঁধেই।