অনুব্রত মণ্ডলের বাড়ি–পার্টি অফিসে উৎসবের রং
বীরভূমের (Birbhum) তৃণমূলের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mandal)—দলীয় কর্মীদের কাছে যিনি ‘দাদা’ বা ‘কেষ্ট’ নামেই বেশি পরিচিত, ৬৭ বছর বয়সে এসে প্রথমবার ক্যামেরার সামনে ঘটা করে পালন হল তাঁর জন্মদিন(Anubrata Mandal's first Grand Birthday Celebration)।
সোমবার বীরভূমের তাঁর বাড়ি এবং জেলা তৃণমূল অফিস—দু’জায়গাতেই যেন উৎসবের আবহ। নীল–সাদা বেলুনে মোড়া ঘর, সামনে সাজানো দশ রকমের মিষ্টি, পায়েস, কেক—সব মিলিয়ে অন্য রকম আনন্দের ছোঁয়া।সাদা পাজামা–পাঞ্জাবিতে অনুব্রতকে ঘিরে ভিড় করেন দলীয় কর্মীরা। ‘হ্যাপি বার্থ’ডে টু দাদা’ ধ্বনিতে মুখরিত পার্টি অফিস, চারদিকে হাততালি। তবে উৎসবের মধ্যেও নেতা যেন একটু ইতস্তত। সলজ্জ হাসি, নরম গলায় স্বীকার করলেন, “আমার জন্মদিন আমি কোনওদিন এভাবে করিনি। পার্টির ছেলেরাই করেছে। দু’একজন বয়স্কও আছে। বাড়ির সামনে করেছে পাড়ার ছেলেরাও।”
অনুব্রত বলেন, তাঁদের বাড়িতে জন্মদিন পালন করার বিশেষ রেওয়াজ নেই। স্মৃতিচারণে বলেন, “আমার জন্মদিনে মা পায়েস করত। দু’চামচ খেয়ে যেতাম। আমাদের বাড়িতে জন্মদিন করতে মানা। মেয়ের জন্মদিনও একবার করে ঠকেছিলাম, তারপর আর করিনি।” তাই ৬৭ বছরে এসে এমন আয়োজন দেখে তিনিও অবাক।
গত বছর পুজোর মুখে জেলমুক্তির পর ফের রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছেন তিনি। জানালেন, “আমার জন্ম ৪ অগ্রহায়ন, ২১ নভেম্বর। তবে আজ জন্মদিনের কথা মনে ছিল না। সকালে মেয়ে বলল—বাবা, আজ তোমার জন্মদিন। তারপর বাড়িতেও কেক কাটা হল, এখানে তো হলই। সবাই অত্যাচার করে কয়েক চামচ পায়েসও খাওয়ালো।”
দলীয় কর্মীরা দাদার পায়ে প্রণাম করে নিল আশীর্বাদ। দিনভর চলল শুভেচ্ছা জানানো, ছবি তোলা এবং আলাপচারিতা। বীরভূমের রাজনৈতিক মহলেও এদিন আলোচনার অন্যতম বিষয়বস্তু ছিল—জেলমুক্তির পর অনুব্রতকে ঘিরে দলীয় কর্মীদের উচ্ছ্বাস।
এদিকে দুপুরে মণ্ডল পরিবারের রান্নাঘরেও বিশেষ আয়োজন ছিল। পরিবার সূত্রে জানা যায়—মেনুতে ছিল ভাত, পাঁচ রকম ভাজা, ফুলকপি–আলু দিয়ে মাছের ঝোল, পোস্তর বড়া, মাছের মাথা দিয়ে চচ্চড়ি, পটল চিংড়ি, আর অবশ্যই পায়েস। যদিও কেষ্ট চিংড়ি খাননি, তবে বাকি খাবার খেয়েছেন বেশ আয়েশ করেই।