উত্তরের চা বাগানে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১০০ কোটি টাকা
বন্যায় তছনছ হয়ে গিয়েছে উত্তরবঙ্গ। বেহাল অবস্থা চা বাগানগুলিরও। চা শিল্পের জন্য বিশেষ কমিটি গঠন করে সাহায্যের আর্জি জানাল চা ব্যবসায়ীদের সংগঠন টি অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া।
ডুয়ার্সের প্রায় ৪০ টি চা বাগান পুরোপুরি তছনছ হয়ে গেছে। প্রায় ৯৫০ হেক্টর জমি বরবাদ। তার মধ্যে বন্যার জলে ধুয়ে চলে গেছে ৪০০ হেক্টর চা বাগানের জমি। একাধিক রাস্তা, কালভার্ট মুছে গেছে জলের তোড়ে। ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১০০ কোটি টাকা। ঘুরে দাঁড়াতে অন্তত ৫ বছর সময় লাগবে বলে মনে করছেন চা বিশেষজ্ঞরা। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে চা শিল্পের জন্য বিশেষ কমিটি গঠন করে সাহায্যের আর্জি জানাল টি অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া।
শনিবারের বন্যার পর থেকে বহু চা-বাগান এখনও বিপর্যস্ত অবস্থায় রয়েছে। কেবলমাত্র টি অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ার ৭ টি চা বাগানে প্রায় ১৪ হাজার শ্রমিক কাজ করে। এদের রুজি রোজগার নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ক্যারণ ও কালিখোলা নদীর জলে প্লাবিত হয়েছে চ্য়াংমারি চা বাগান। সুখানি নদীর জলে ভেসেছে নাগরাকাটা চা বাগান। পানা নদীর জলে প্লাবিত মেচপাড়া চা বাগান। হাতিনালা নদী ভাসিয়েছে মোরাঘাট ও রিয়াবাড়ি চা বাগানকে। দাগাপুর চা বাগানের ফ্যাক্টরি যে কোনও মুহূর্তে পঞ্চনোই নদীর গর্ভে চলে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে বালাশন নদী গ্রাস করছে মাটিগাড়া বাগানের মাটি। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি ভয়াবহ।"
উত্তরবঙ্গের সম্পাদক সুমিত ঘোষ জানান, এই বন্যায় উত্তরবঙ্গের চা-বাগান এলাকায় প্রায় ১০০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে শুধু ডুয়ার্সে ক্ষতির পরিমাণ ১৩ থেকে ১৪ কোটি টাকা। ৪০ থেকে ৪৫টি চা-বাগান মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বহু বাগানে ফ্যাক্টরি ও যন্ত্রাংশের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও, শ্রমিক কোয়ার্টার, কারখানা, মূল চা গাছ, ছায়া গাছ ও সম্পূর্ণ প্লান্টেশন এলাকাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি বলেন, "বন্যা, নদীর গতিপথ পরিবর্তন এবং পাহাড়ি নদীর বাঁধ ভেঙে যাওয়ার ফলে চা-বাগান সংলগ্ন জমির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এর ফলে শুধু উৎপাদনই নয়, শ্রমিকদের জীবনযাত্রাও মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হয়েছে। এই বিপর্যয় থেকে পুরোপুরি ঘুরে দাঁড়াতে প্রায় পাঁচ বছর সময় লাগতে পারে। রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার যৌথভাবে উদ্যোগ নিলে তবেই চা-বাগান শিল্পকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।"