হিমালয়ের ৯,৫০০ ফুট উঁচুতে মা চণ্ডীর মন্দিরে যাওয়ার মুখেই বিপর্যয়
জম্মু-কাশ্মীরের কিস্তওয়ার জেলায় মেঘভাঙা বৃষ্টিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৩৮। আহতের সংখ্যা অন্তত ৫০ জন। হিমালয়ের অন্যতম তীর্থস্থান মা চণ্ডীর মন্দির মাচাইল মাতা যাত্রার সময়কালে এই বিপর্যয় ঘটে। এর ফলে পুণ্যার্থীদের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। যাত্রার জন্য ডিউটিতে থাকা সিআইএসএফের এক জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে এবং নিখোঁজ আরও ৩ জওয়ান। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এই বিপদের সময়ে জম্মু-কাশ্মীর সরকারের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লার সঙ্গে ফোনে কথাও বলেন শাহ।
কিস্তওয়ার থেকে ৯০ কিমি দূরে ৯,৫০০ ফুট উঁচুতে অবস্থিত চাসোটি এলাকায় দুর্ঘটনা ঘটে। সেখান থেকেই সাড়ে ৯ কিমি হেঁটে যেতে হয় মন্দিরে। পুণ্যার্থীদের ওই স্থানে একটি অস্থায়ী লঙ্গরখানা খোলা হয়েছিল, সেটি একেবারে ধুয়েমুছে সাফ হয়ে গিয়েছে। উধমপুর থেকে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর দুটি টিম কিস্তওয়ার রওনা হয়ে গিয়েছে। হড়পা বানে বহু ঘরবাড়ি তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়েছে। সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, বিপর্যয়ের ভয়াবহতা এতটাই যে, ত্রাণ, উদ্ধারকাজ শেষ করতে অন্তত দিন ২০ সময় লাগবে।
জেলার পাড্ডার চাসোটি এলাকায় দুপুর ১২টা থেকে ১টার মধ্যে বিপর্যয়টি ঘটে। তখন সেখানে বিপুল সংখ্যার পুণ্যার্থী জড়ো হয়েছিলেন। সেখান থেকেই হেঁটে মন্দিরে যাওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন তাঁরা। হড়পা বানে স্থানীয় একটি লঙ্গরখানা ভেসে গিয়েছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং ঘটনার উপর নজর রাখছেন এবং কিস্তওয়ার প্রশাসনের সঙ্গে লাগাতার যোগাযোগ রাখছেন। কেন্দ্রকে প্রথম বিষয়টি জানান স্থানীয় বিধায়ক সুনীলকুমার শর্মা।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, খবর মেলা মাত্রই উদ্ধারকাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। একটি দল ত্রাণ ও উদ্ধার সামগ্রী নিয়ে এলাকার দিকে রওনা হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও হিসাবের বাইরে। ডাক্তার ও ওষুধপত্র নিয়ে মেডিক্যাল টিমও বিপর্যস্ত এলাকার দিকে যাচ্ছে। জেলার ডেপুটি কমিশনার পঙ্কজ শর্মা বলেন, হড়পা বানটি হয়েছে চাশোতি এলাকায়। এই জায়গাটি হল মাচাইল মাতা যাত্রার শুরুর পয়েন্ট।
জম্মু-কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা বিপর্যস্ত এলাকা ও মৃতদের পরিবারের প্রতি শোকপ্রকাশ করেছেন। যাঁরা জখম হয়েছেন তাঁদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন উপরাজ্যপাল। তিনি জানান, সাধারণ মানুষ, পুলিশ, সেনা, এনডিআরএফ ও রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে জরুরিভিত্তিতে ত্রাণ ও উদ্ধারকার্য চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।