শাহের ‘অনুপ্রবেশ’ চিঠির জবাবে শশীর তোপ
বাংলার রাজনীতিতে ফের উত্তাপ। অনুপ্রবেশ রোখা ও ভোটার তালিকা পরিশোধন নিয়ে নির্বাচন কমিশনকে লেখা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর (Amit Shah) চিঠি বিতর্কের কেন্দ্রে। সরাসরি তৃণমূলের নাম না করলেও, তাঁর অভিযোগ— “কিছু দল কমিশনের পরিশোধন প্রক্রিয়ায় বাধা দিচ্ছে।” এই মন্তব্যের পরই রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজার (Shashi Panja) তীব্র প্রতিক্রিয়া, যা ঘিরে শুরু হয়েছে নতুন রাজনৈতিক তরজা।
শশী পাঁজা শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “অমিত শাহ যাই বলুন, তাঁর আমলেই দেশ নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে বাস করছে— এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। না হলে পহেলগামে এত পর্যটক মারা যেত না, দিল্লির মতো রাজধানীতে বিস্ফোরণ ঘটত না। দেশের নিরাপত্তায় ফাঁক রয়েছে, জঙ্গিরা বাইরে থেকে ঢুকে পড়ছে, যা আপনার নজর এড়িয়ে যাচ্ছে।” তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্র নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে বারবার বাংলাকে দোষারোপ করছে।
এসআইআর নিয়ে তৃণমূলের আপত্তির বিষয়েও মুখ খোলেন শশী। বুধবার কমিশনকে পাঠানো চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছিলেন— এসআইআর-এর কাজ তড়িঘড়ি, অগোছালো ও জবরদস্তিমূলকভাবে চালানো হচ্ছে, যা বহু প্রকৃত ভোটারের নাম বাদ পড়ার ঝুঁকি তৈরি করছে। মুখ্যমন্ত্রীর সেই অভিযোগের পরই শাহ কমিশনকে পাল্টা চিঠি পাঠান।
শশী বলেন, “২০০২ সালে এসআইআর করতে দু’বছর লেগেছিল। এবার দুই মাসে শেষ করার চাপ! এত তাড়াহুড়োর কারণ কী?” তাঁর দাবি, ময়দানে নামা বিএলওরা ভয় ও চাপে কাজ করতে পারছেন না। অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন, মৃত্যুও হচ্ছে। “ভয়ে আতঙ্কে ৩১ জন মারা গেছেন— এই মৃত্যুর কান্না কি আপনার হৃদয় স্পর্শ করে না?” প্রশ্ন শশীর।
তাঁর অভিযোগ, এসআইআরের নামে বাংলায় এক ধরনের ভয় ও অস্থিরতার পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে। রাজনৈতিকভাবে বাংলা জয় করতে না পেরে কেন্দ্র অন্য পথ নিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। শশীর বক্তব্য— “এসআইআরের নাম করে বাংলাকে যেনতেন করে কব্জা করার চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু মানুষ এসব বোঝেন। ভয় দেখিয়ে বাংলাকে দখল করতে পারবেন না।”
বিজেপিকে সরাসরি নিশানা করে তাঁর কটাক্ষ— যাই করুন, বাংলার কাছে বিজেপি বহিরাগত। বাংলাবিরোধী অবস্থান নিয়েই আপনারা চলছে। এবারের ভোটে বিজেপির আসন ৫০-এর নীচে নামবে।
অনুপ্রবেশ, নিরাপত্তা, ভোটার তালিকা সংশোধন— প্রতিটি ইস্যুই এখন রাজ্যে রাজনৈতিক বাগযুদ্ধের কেন্দ্রবিন্দুতে। লোকসভা নির্বাচনের মুখে অমিত শাহ ও তৃণমূল নেতৃত্বের এই সরাসরি তীব্র বাক্যালাপ যে আগামী দিনে আরও তপ্ত করে তুলবে বাংলার রাজনৈতিক আবহ, তা বলাই বাহুল্য।