পুলিশকে ঘোল খাইয়ে অবশেষে জালে 'লুটেরা দুলহান'
একে একে আট জন পুরুষকে বিয়ে করে তাঁদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা আদায় করেছেন। খুঁজছিলেন নয় নম্বর বার কাকে বিয়ে করা যায়। ঠিক তার আগেই পুলিশের হাতে ধরা পড়লেন মহারাষ্ট্রের নাগপুরে এক মহিলা। নাম সামিরা ফাতিমা ওরফে লুটেরা দুলহান।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত সামিরা একের পর এক পুরুষকে ফাঁদে ফেলে তাঁদের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতেন। পরে বিভিন্ন অজুহাতে ব্ল্যাকমেল করে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করতেন। এই প্রতারণায় তাঁর সঙ্গে আরও একটি গ্যাং কাজ করত।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, তিনি আদতে একজন শিক্ষিকা। উচ্চশিক্ষিত সামিরা দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে এমন প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছিলেন বলে অনুমান পুলিশের। মূলত মুসলিম সমাজের বিবাহিত এবং সম্পন্ন পুরুষদের টার্গেট করতেন। তিনি কখনও কাঁদতে কাঁদতে নিজের 'দুর্দশার' গল্প শোনাতেন, দাবি করতেন, তিনি নিজে একজন ডিভোর্সি মহিলা, তাঁর একটি সন্তান রয়েছে এবং জীবনে খুব কষ্টের মধ্যে রয়েছেন। আর এই ভাবে সহানুভূতি আদায় করে সম্পর্ক গড়ে তুলতেন সকলের সঙ্গে।
একাধিক ফেসবুক প্রোফাইল, হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর এবং ম্যাট্রিমনিয়াল ওয়েবসাইটের মাধ্যমে'শিকার'-দের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন তিনি। একবার সম্পর্ক গড়ে উঠলেই বিয়ের প্রস্তাব দিতেন। পরে বিয়ে করে শুরু হত ব্ল্যাকমেল। কেউ টাকা না দিতে চাইলে হুমকি দিতেন, পুলিশের কাছে মিথ্যে অভিযোগ করবেন।
এক ভুক্তভোগীর জানান, সামিরা তাঁর থেকে ৫০ লক্ষ টাকা এবং আরেকজনের থেকে ১৫ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এই অর্থ নগদ এবং ব্যাঙ্ক ট্রান্সফারের মাধ্যমে আদায় করেছেন তিনি। এমনকি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের একাধিক আধিকারিকও তাঁর প্রতারণার ফাঁদে পড়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এর আগেও তাঁকে একবার গ্রেফতার করার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু সে বার নিজেকে অন্তঃসত্ত্বা বলে দাবি করে পুলিশের হাত থেকে বেঁচে যান। অবশেষে গত ২৯ জুলাই নাগপুরের একটি চায়ের দোকান থেকে তাঁকে পাকড়াও করে পুলিশ।